সরকারের প্রণোদনা তহবিল থেকে ঋণ পাবে না যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষত মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা তহবিল থেকে কারা ঋণ পাবে না- তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রোববার শিল্প ও সেবা খাতের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের এ নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে ব্যাংক শর্ত দিয়েছে, ঋণখেলাপি এবং তিনবারের বেশি ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন- এমন ব্যবসায়ীরা এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল থেকে নেয়া ঋণের মেয়াদ হবে তিন বছর। তবে সরকার প্রথম বছরে সুদ হিসাবে অর্ধেক বা সাড়ে ৪ শতাংশ বহন করবে। ব্যাংকগুলো নিজম্ব তহবিল থেকে ঋণ নীতিমালা মেনে এ ঋণ দেবে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবন, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণসুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বা চলতি মূলধনসুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালায় বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত এই প্যাকেজের আওতায় ব্যাংকগুলো করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা দেবে। চলতি মূলধন হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের সুদের বোঝা সহনীয় করার জন্য এ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার হবে ৯ শতাংশ। এর অর্ধেক বা সাড়ে ৪ শতাংশ সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে।

নীতিমালায় বলা হয়, এ ঋণ ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদিত হতে হবে এবং প্রতিটি ঋণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। সরকার যে সুদ প্রদান করবে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রদান করা হবে। এই তহবিল থেকে কোন ব্যাংক কত টাকা চলতি মূলধন পাবে, তা ওই ব্যাংকের ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের এই দুই খাতে কী পরিমাণ ঋণ দিয়েছে, তার ওপর নির্ভর করবে।

এতে উল্লেখ করা হয়, এই প্যাকেজের মেয়াদ হবে তিন বছর। তবে কোনো গ্রাহক সর্বোচ্চ এক বছর সুদ ভর্তুকি পাবেন। যেসব প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, শুধু তারাই এই সুবিধার আওতাভুক্ত হবে। কোনো খেলাপি গ্রাহক এ সুবিধার আওতায় ঋণ পাবেন না। আবার তিনবারের বেশি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে, এমন কোনো গ্রাহকও মূলধনসুবিধা নিতে পারবেন না। যেসব ব্যবসায়ী এখনো ব্যাংক থেকে কোনো ঋণসুবিধা নেননি কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত, তারাও এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। এ জন্য তাদের আর্থিক বিবরণীর যে রেটিং ন্যূনতম মার্জিনাল বা প্রান্তিক হতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণসুবিধা পাবে, তারা ওই প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তা ব্যবহার করবে। ব্যবসা সম্প্রসারণ বা নতুন কোনো ব্যবসার জন্য এই ঋণ ব্যবহার করা যাবে না।

নীতিমালায় আরও উল্লেখ করা হয়, একটি প্রতিষ্ঠান তহবিল থেকে কী পরিমাণ ঋণ পাবে, তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ব্যাংক থেকে চলতি মূলধন সুবিধা নিয়েছে, তার ৩০ শতাংশের বেশি এই তহবিল থেকে নিতে পারবে না। ব্যাংকগুলোর কাছে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে, যেসব প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তারা আগে এই ঋণ পাবে। পরবর্তী বছরে ধারাবাহিকভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সুবিধা দিতে হবে। একক গ্রাহক ঋণসীমা লঙ্ঘন করে কাউকে বেশি ঋণ দেয়া যাবে না। এ ঋণ আদায়ের সব দায়দায়িত্ব ব্যাংকের। যদি টাকা আদায় করতে না পারে, তা যথাযথ মানে শ্রেণিকরণ করে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050301551818848