সহপাঠীকে আলিঙ্গন করে বহিষ্কার

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সহপাঠীকে ‘দীর্ঘ আলিঙ্গন’ করার কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় ছেলেটিকে। বহিষ্কারাদেশের কারণে ওই স্কুল থেকে বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেওয়াও হয়ে পড়ে অনিশ্চিত। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে আদালত এতে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকৃতি জানান। শেষ পর্যন্ত বহু দেনদরবার করে এক সাংসদের হস্তক্ষেপে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায় ছেলেটি। গতকাল শনিবার সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

এত প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে পরীক্ষা দিলে কেমন হতে পারে ফল? এমন কৌতূহল ছিল প্রত্যেকের। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৯০ শতাংশের ওপর নম্বর পেয়ে দারুণ ফল করেছে সে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালা রাজ্যের রাজধানী থিরুভানানথাপুরামে।

রোববার (২৭ মে)  কিশোরী সহপাঠীকে দীর্ঘ সময় আলিঙ্গন করা এবং ইনস্টাগ্রামে ঘনিষ্ঠ ছবি প্রকাশ করার কারণে গত বছর থিরুভানানথাপুরামের সেন্ট টমাস সেন্ট্রাল স্কুল দ্বাদশ শ্রেণির ১৭ বছর বয়সী ওই ছাত্র ও তার সহপাঠীকে বহিষ্কার করে। সহপাঠী একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এ বছর দেশটির কেন্দ্রীয় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) পরীক্ষায় ওই ছাত্রের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তবে আদালত এতে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নেন। এমপি শশী থারুর হস্তক্ষেপে পরবর্তী সময়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বহিষ্কৃত ছাত্রের ব্যাপারে নমনীয় হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে তাকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে বোর্ডকে অনুরোধ জানায়। সেই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছেলেটি ৯১ দশমিক ২ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করেছে।

ছেলেটির বাবা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ইংরেজিতে ৮৭, অর্থনীতিতে ৯৯, ব্যবসায় শিক্ষায় ৯০, হিসাববিজ্ঞানে ৮৮ এবং মনোবিজ্ঞানে ৯২ নম্বর পেয়েছে। তার গড় নম্বর ৯১ দশমিক ২ শতাংশ।

গত বছর ওই ছাত্র বহিষ্কার হওয়ার পর তা ব্যাপক প্রচার পায় গণমাধ্যমে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই সময় জানায়, স্কুলের কিছুটা নির্জন এলাকায় তারা দীর্ঘক্ষণ একে অপরকে আলিঙ্গন করে রাখে। সাধারণ আলিঙ্গন হলে তা এতটা দীর্ঘ সময় হওয়ার কথা নয়। একপর্যায়ে এক শিক্ষক তাদের দেখে কড়া ধমক দিলে তারা একে অপরকে ছেড়ে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যায়। এ ছাড়া দুজনের ঘনিষ্ঠ অনেক ছবি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট করেছে তারা, যাতে তাদের সহপাঠীরা ‘লাইক’ দিয়েছে। এসব মেনে নেওয়া যায় না। তবে ওই সময় ছাত্রীটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল, তারা কয়েক সেকেন্ড আলিঙ্গন করে ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে এ ঘটনায় চরম অপমান করেছে এবং তাকে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেছে। তার পরিবারকেও হেয় করেছে।

স্কুলের এই বহিষ্কারাদেশ নিয়ে ওই ছাত্র শিশু অধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন ছেলেটিকে স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়ার আদেশ দেয়। কমিশনের সেই আদেশের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করে। আদালত জানান, শৃঙ্খলা রক্ষার্থে স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রথম আদেশ থেকে দুই কিশোর-কিশোরীর বিরুদ্ধে করা বিরূপ মন্তব্য বাদ দেওয়ার আদেশ দেন। আপিল আবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করেছিল ছেলেটির পরিবার।

সূত্র: এনডিটিভি


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049178600311279