ই-টিন সার্ভার হ্যাকড হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। সংঘবদ্ধ একটি চক্র এনবিআরের একজন কর্মকর্তার আইডি ও পাসওয়ার্ড জালিয়াতি করে অবৈধভাবে সার্ভারে ঢুকে ভুয়া ই-টিনের অনুমোদন দিয়েছে।
এমনও দেখা গেছে, সাত বছরের শিশুর নামেও ই-টিন হয়েছে। এ রকম দুই শতাধিক ভুয়া ই-টিন শনাক্তের পর রমনা থানায় মামলা করেছে রাজস্ব বোর্ড। সেই মামলায় এক আয়কর আইনজীবীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তবে মামলায় আসামি হিসেবে রাজস্ব বোর্ডের একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের নাম থাকলেও চাপের মুখে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। যদিও রাজস্ব বোর্ড পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। অন্যদিকে, তদন্ত শুরু হতে না–হতেই তদন্তকারী সংস্থাকে না জানিয়ে মামলাটি আর চালাবেন না বলে আদালতে হলফনামা দিয়েছেন মামলার বাদী।
কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী তানজীব উল আলম বলেছেন, এই মামলার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তদন্তকারীদের উচিত শক্তভাবে সব খতিয়ে দেখে চক্রটিকে শনাক্ত করা, তা না হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ভুয়া টিন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড হলে রাষ্ট্র এসব খাত থেকে কোনো ট্যাক্স পাবে না।
টিআইএন বা টিন হলো একজন আয়করদাতার শনাক্তকরণ নম্বর। ১২ ডিজিটের এই নম্বরের জন্য দেশের যেকোনো স্থান থেকে আবেদন করতে হয় অনলাইনে। আবেদনের পর নম্বরটি পাওয়া যায় স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায়। এতে প্রথমে একজন আবেদনকারী এনবিআরের ওয়েবসাইটে ঢুকে নির্ধারিত ফরম পূরণ করেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য আপলোড করেন।
সব তথ্য ঠিক থাকলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিন নম্বর পেয়ে যান। আর যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে, তাহলে আবেদনের সঙ্গে পাসপোর্টের কপি ফরমের সঙ্গে আপলোড করতে হয়। এরপর এনবিআরের একজন কর্মকর্তা সেই তথ্য মিলিয়ে দেখেন, সব যদি ঠিক থাকে তাহলে তিনি টিন নম্বর দেওয়ার সুপারিশ করেন। আরেকজন কর্মকর্তা সেটা অনুমোদন দিলে ১২ ডিজিটের একটি নম্বর চলে আসে আবেদনকারীর ই-মেইলে। এই নম্বরই ব্যক্তির আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর, যা ই-টিন।