সিরাজগঞ্জের ২ সরকারি হাসপাতালে অনুপস্থিত ৩০ চিকিৎসক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি |

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল এবং শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ৩০ চিকিৎসক কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।  অনুপস্থিতদের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালের ২৮ জন ও শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের দুজন রয়েছেন।  রোববার (২৯ মার্চ) এই দুটি সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।[]inside-ad

চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রঞ্জন কুমার দত্ত বলেন, ‘আমি নিজে ঘরবাড়ি ও সংসার ছেড়ে এ ক্রান্তিকালীন সময়ে হাসপাতালে পড়ে আছি। অথচ সহকর্মীদের বার বার সতর্ক করার পরও যদি না আসেন তাহলে আমার কী করার আছে? ’

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে আগে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ রোগী থাকলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে রোববার রোগী ছিলেন মাত্র ৬০ জন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ের পাশাপাশি জ্বর, সর্দিকাশি ও নিউমোনিয়ার রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অলিখিত বা কৌশলগত আপত্তি থাকায় আকস্মিকভাবে রোগী ভর্তির পরিমাণ কমে গেছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে।  আবার কেউ কেউ ভর্তি হলেও একদিন যেতে না যেতেই তাকে কৌশলে ডিসচার্জ করে চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নজরুল ইসলাম রোববার (২৮ মার্চ) দুপুরে জানান, কম করে হলেও তার কলেজের ২৭-২৮ জন চিকিৎসক শিক্ষক সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করে এ মুহূর্তে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। করেনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্থানে লকডাউনে তারা আটকে পড়ায় কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারেননি বলে ফোনে জানিয়েছেন। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়কে এ বিষয়ে অবহিত করার পর মেইলে তাদের সবাইকে চূড়ান্ত পত্রও দেয়া হয়েছে। আগামীতে তাদের নামের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হতে পারে।

জেলা শহরের রেলকলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম রোববার দুপুরে বলেন, ‘প্রচণ্ড পেটের ব্যথা নিয়ে সকালে জেনারেল হাসপাতালে আসি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রোকন উদ্দিন আমাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে অনুনয়-বিনয় করার পর দুপুরে ভর্তি করে স্যালাইন দেন। বিকাল গড়িয়ে গেলেও কোনও চিকিৎসক আসেননি।’

কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামের মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘মাড়ির সমস্যা নিয়ে শনিবার ভর্তি হলেও রোববার ছেড়ে দেয়া হয়।’

সদর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের ইনচার্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মনোয়ার আলী বলেন, ‘রোববার আমার ওয়ার্ডে মাত্র সাতজন রোগী ছিলেন। রোববার সকালে তিনজনকে ডিসচার্জ দেয়া হয়েছে।’

সার্জারি ওয়ার্ডের ইনচার্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাব্বান তালুকদার দাবি করে বলেন, ‘নিজে ঢাকায় হোম কোয়ারেন্টানে আছি। রোগীর চাপ কম থাকলেও রোস্টার করে সহকর্মী অন্যান্য চিকিৎসকরা এ মুহূর্তে যথারীতিই দায়িত্বপালন করছেন।’

সিভিল সার্জন ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘সিরাজগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৫৫৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৪ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।  দুজনের রক্ত ও লালা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হলেও করোনা ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়নি। সোমবার আরও তিন জনের রক্ত ও লালা সংগ্রহ করা হতে পারে।’

এদিকে, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ জানান, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না রোববার সকালে জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে গিয়ে চিকিৎসকদের উপস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করেছেন।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058670043945312