ইলিশের নুডলসের পর এবার সিলভার কার্পের নুডলস তৈরিতে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। এতে করে শিশু-কিশোর ও বয়স্করা কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই মাছের পুষ্টিগুণ লাভ করতে পারবে। এমনকি সিলভার কার্প মাছে মূল্য সংযোজনের কারণে মাছ চাষিরাও লাভবান হবেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে উদ্ভাবিত নুডলসের প্যানেল টেস্ট করা হয়। সেখানে সিলভার কার্প মাছের নুডলস উদ্ভাবনের তথ্য জানান প্রধান গবেষক ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখা।
গবেষক দলের অনন্য সদস্যরা হলেন— সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লাবিবা ফারজানা পল্লবি এবং শামছুননাহার সীমা। প্রধান গবেষক ড. ফাতেমা হক শিখা বলেন, সিলভার কার্প একটি বিদেশি কার্প জাতীয় মাছ। দেশে প্রচুর পরিমাণে চাষ হলেও মাছটিতে কাঁটা বেশি থাকায় অনেকেই এ মাছ খেতে চান না। এতে উৎপাদনকারী মাছ চাষি যেমন বাজারে সঠিক দাম পাচ্ছেন না তেমনি ভোক্তাও এ মাছের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই মাছটিকে কাঁটামুক্ত ও স্বাদ অক্ষুণ্ন রেখে বিকল্প উপায়ে ভোক্তার কাছে মাছের স্বাদ পৌঁছানোর জন্যই নুডলসটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের তত্ত্বাবধানে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ওই গবেষণা করা হয়।
গবেষণা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, সিলভার কার্পের নুডলস তৈরির জন্য প্রথমে সিলভার কার্প মাছ থেকে ‘মাছ’ সংগ্রহ করে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি ও চর্বি বের করে নিয়ে কিমা তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু মাছের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অংশ নুডলসের স্বাদ, গন্ধ এবং সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাই ময়দার সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘মাছের’ কিমা এবং অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে নুডলস তৈরি করা হয়েছে।
নুডলসয়ের গুণগতমান সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম নুডলসে আমিষের পরিমাণ ২৩.৮০ শতাংশ, লিপিডের পরিমাণ ৮.৬ শতাংশ, শর্করার পরিমাণ ৫৫.৫৪ শতাংশ, অ্যাশ ২.৯৭ শতাংশ এবং পানির পরিমাণ ৯.০৯ শতাংশ। এছাড়াও ১০০ গ্রাম নুডলস থেকে মোট ৩৯৪.৭৬ ক্যালরি পরিমাণ শক্তি পাওয়া যাবে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে নুডলসটি প্রায় এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। এই নুডলসটিকে বাজারজাত করার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন নুডলস বাজারজাতকরণ কোম্পানি যোগাযোগ করছে। অচিরেই বাজারে আনার জন্য চেষ্টা করছি।