সিলেটের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, নেপাল, ভূটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ফিলিস্তিন ও আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা নিতে প্রতি বছর সিলেটের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে অনেক বিদেশি শিক্ষাজীবন শেষ করে দেশে ফিরে গেছেন। অনেকে ইন্টার্নশিপ করছেন। কেউ কেউ আবার ইন্টার্নশিপ শেষে এখানেই চাকরি নিয়ে স্থায়ী হচ্ছেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, অন্য দেশের তুলনায় কম খরচ, মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় কম হওয়ায় সিলেটে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। পড়াশুনার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করায় এখানকার সংস্কৃতিতে মিশে গেছেন তারা। পোশাক-পরিচ্ছদ, কথা-বার্তা এমনকি খাবারের সঙ্গেও তারা নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন।
সহপাঠী থেকে শুরু করে ক্লাসের শিক্ষকদের সঙ্গে পুরোদমে বাংলায় কথা বলতে পারেন অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী। এমনকি সিলেটের আঞ্চলিক ভাষাও রপ্ত করেছেন কেউ কেউ। এছাড়া পূজা-পার্বণসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেন তারা। সিলেটের সংস্কৃতিকে আপন করে নিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন নিজভূমি ছেড়ে আসা এসব শিক্ষার্থী।
পাঁচটি সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের তথ্যানুসারে বর্তমানে সিলেটে পৌনে ৮শ বিদেশি শিক্ষার্থী আছেন। এর মধ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ৫৪ জন, জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে ২৭৩ জন, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজে ১৫৯ জন, পার্কভিউ মেডিকেল কলেজে ৬০ জন ও নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজে ২২৪ জন।
সিলেটে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারত ও নেপালের। তাছাড়া শ্রীলঙ্কা, মালেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফিলিস্তনসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
জানা গেছে, প্রতিবছরই সিলেটে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে সিলেটের পাঁচটি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ১ম বর্ষে ভর্তি হন ১৩৪ জন। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন ১৩৯ জন। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছেন ১৭১ জন। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কলেজগুলোর দেয়া তথ্যানুসারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নরত ৫৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে নেপালের ৭ জন, ভুটানের ১২ জন, ভারতের ৩ জন, ফিলিস্তিনের ৬ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪জন, যুক্তরাজ্যের ৩ জন, মালেশিয়ার ৯জন ও পাকিস্তানের ৪ জন।