সরকার মাল্টিমিডিয়া ক্লাস পরিচালনার জন্য প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, মডেমসহ নানা যন্ত্রপাতি দিয়েছে। এগুলো বিদ্যালয়ে থাকার কথা। কিন্তু সুনামগঞ্জের কয়েকটি স্কুলের ল্যাপটপ বাসায় নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক। ফলে বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। তা ছাড়া আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ না দেওয়ায় প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারছেন না তারা। এতে সরকারের এই প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে এক হাজার ৪৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নতমানের ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে। অন্য যন্ত্রগুলো বিদ্যালয়ে পরিত্যক্ত পড়ে থাকলেও ল্যাপটপ আর মডেম প্রধান শিক্ষকের জিম্মায় থাকছে। নিয়মানুযায়ী আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছে কম্পিউটার থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ প্রধান শিক্ষক তা নিজেদের কাছে রেখে দেন। তাদের ছেলে-মেয়েরা সেই ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ না থাকায় ক্লাস নিতে পারেন না প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন কম্পিউটার ব্যবহার না করায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসসহ প্রশিক্ষণের নিয়মকানুন ভুলতে বসেছেন। এ নিয়ে কথা বললে প্রধান শিক্ষকরা আইসিটি শিক্ষকদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জগন্নাথপুর উপজেলার আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক শিক্ষক বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরই আমার বিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রধান শিক্ষকের জিম্মায়। তিনি বিদ্যালয়ে ল্যাপটপটি আনেন না। তাঁর সন্তানরা সেটি ব্যবহার করছে। এ কারণে আমি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিতে পারি না। সুযোগ না পাওয়ায় ব্যবহারও ভুলে যাচ্ছি। জেলার সব বিদ্যালয়েরই একই চিত্র।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শত্রুমর্দন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহিত রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘নিয়মিত কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ না পাওয়ায় অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছি। তার পরও মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিতে।’
সুনামগঞ্জের সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসসহ প্রযুক্তিসংক্রান্ত নানা বিষয়ে কাজ করার জন্য সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ল্যাপটপ দিয়েছে। এর স্বত্বাধিকারী প্রধান শিক্ষক নন, এটা স্কুলের সম্পদ। স্কুলের যেকোনো প্রয়োজনে আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক এটি ব্যবহার করতে পারবেন।’
সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ