সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রায় অমান্যের অভিযোগ

উলিপুর (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: |

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ‘মধুপুর সরকার পাড়া হরিফিয়া দাখিল মাদরাসা’র সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের একটি রায় অমান্যের অভিযোগ উঠেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিকে ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রাখা যাবে না মর্মে হাইকোর্ট রায় দিলেও প্রতিষ্ঠানটির সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাইকোর্টের ওই রায় তোয়াক্কা না করে এবতেদায়ী শাখার এক শিক্ষককে বছরের পর বছর সাময়িক বরখাস্ত করে রেখেছেন। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই প্রতিষ্ঠানের  এবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল আজিজ মিয়া প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে এখনও কোনো প্রতিকার পাননি।

জানা যায়, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর সভায় অনুপস্থিতি, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে প্রতারণামূলক আচরণ এবং কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করেছেন উল্লেখ করে এবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল আজিজ মিয়াকে সাময়িক বরখাস্তের স্মারক বিহীন এক অফিস আদেশ দেন তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ জয়নুল আবেদীন। সেসময় ম্যানেজিং কমিটির স্মারকবিহীন সাময়িক আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে কুড়িগ্রাম কোর্টে মামলা করেন শিক্ষক আব্দুল আজিজ মিয়া। মামলা চলমান অবস্থায় হাইকোর্ট ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ৩৬৫৭ নং রীট পিটিশনের আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (মাদরাসাসহ) কোনো শিক্ষক-কর্মচারিকে ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রাখা যাবে না মর্মে রায় প্রদান করেন।

অপরদিকে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের স্মারক নং- ৫৭.২৫.০০০০.০০৪.০০১.১৭৪ এ একই নিয়ম উল্লেখ করে পরিপত্র জারি করে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ৪ নভেম্বর আমাকে হয়রাণীমূলক বিভিন্ন অভিযোগে এনে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে আমি এর জবাব দেই। কিন্তু নোটিশের জবাব পেয়েও সভায় অনুপুস্থিতি, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে প্রতারণামূলক আচরণ, কমিটির কোন বৈধ আদেশ পালন না করে কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করার কথা উল্লেখ করে স্মারক বিহীন আদেশ দিয়ে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

তিনি আরও জানান, ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক-কর্মচারি বেতন ও অন্যান্য সমুদয় ভাতাদি প্র্রাপ্য হওয়ার বিধান থাকলেও তাকে ভাতাদি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বারবার কর্তপক্ষের কাছে আবেদন করেও সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহার না করায় তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।

বর্তমান সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আব্দুল আজিজ বলেন, ‘সুপার আমার সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহার ও বিলের জন্য মোটা অংকের টাকা অথবা সম্পূর্ণ বকেয়া বিল দাবি করেছে। টাকা ছাড়া কমিটি বিলে সই করবে না, এমন কথাও বলেছে সুপার।’

এ বিষয়ে সরকারি কৌশলী (এজিপি) এ্যাডভোকেট আব্দুল গফুর জানান, কোনো বিষয়ে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় হাইকোট যদি একই ধরনের মামলার ওপর আদেশ জারি করেন তাহলে পূর্বের মামলা বিলুপ্ত হয়ে যায়।

সরকারি কৌশলী আরও বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের সাময়িক আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া আইন বহির্ভূত। কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান যদি এ আদেশ অমান্য করেন তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। 

সাময়িক বরখাস্ত বিষয়ে মাদরাসার সুপার মো. আহম্মেদ আলী জানান, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যখ্যা চেয়েছেন। এ ব্যাপারে শীঘ্রই ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে একটি আবেদন পাওয়া গেছে। আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002525806427002