সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে শিক্ষা ক্যাডারের ইফতেকারের নিয়োগ অবৈধ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর পুরান ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর নিয়োগ অবৈধ। তাকে প্রচলিত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়নি। টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভূক্তকরণের অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তদন্তে অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর নিয়োগ অবৈধ ও বির্তকিত বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ওঠা ‘টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের’ অভিযোগেটির সত্যতাও পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কর্মকর্তারা। 

ইফতেকার আলী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত পরিসংখ্যানের শিক্ষক। তিনি এর আগে ঢাকা কলেজে ছিলেন। তদবির করে লিয়েনে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ পদ বাগান তিনি। তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কোষাধ্যক্ষ পদে থেকে ব্যাপক লুটপাট করেন। 

জানা গেছে, অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ ও দুর্নীতির নানা অভিযোগ আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। অভিযোগে বলা হয়, অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর নিয়োগ অবৈধ। তাকে বেসরকারি কলেজের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়নি। তিনি স্বেচ্ছাচারিভাবে কলেজে পরিচালনা করছেন। অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন ৪৯ জন খণ্ডকালীণ শিক্ষক। এছাড়া প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের হয়রানীর অভিযোগ এসেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগে আরও বলা হয়, টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করেছেন অধ্যক্ষ ইফতেকার আলী।   

এ প্রেক্ষিতে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে এসব অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। একই বছর ১৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগটি তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আশেকুল হক এবং সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বনমালী মোহন ভট্টাচার্য্যকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ অক্টোবর অভিযোগটি সরেজমিনে তদন্ত করেন এ কর্মকর্তারা। তদন্তের প্রেক্ষিতে গত ২ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর নিয়োগ বিতর্কিত এবং তা প্রমাণিত হয়েছে। অধ্যক্ষ হিসেবে তাকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের উন্নয়নের স্বার্থেই সরকারি কলেজের একজন শিক্ষককে লিয়েনে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু ইফতেকার আলীকে যে প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো তা ত্রুটিপূর্ণ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাকে যে পরিমান বেতনভাতা প্রদান করা হচ্ছে তাতে কলেজে উপকৃত না হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

এছাড়া ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে ওঠা টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে আসা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগেরও সত্যতা পাওয়া গেছে। এছাড়া অবৈধ উপার্জনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের হয়রানীর প্রেক্ষিতে ইফতেকার আলীকে আর্থিক বিষয়াদি পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং সবল শিক্ষক কর্মচারীর সাথে সম-আচরণের বিষয়ে যত্নবান হতে হবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026419162750244