সেশন ফি ছাড়া বই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী প্রতিনিধি |

বছরের প্রথম দিনটি ছিল দেশজুড়ে বই উৎসব। তানোর উপজেলার একমাত্র সরকারি মুণ্ডুমালা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করলো স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেশন ফি না দিতে পারায় বছরের প্রথম দিন প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে নতুন বই না দিয়ে ফিরিয়ে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু ও শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম সেশন ফি ছাড়াই বই বিতরণ করার নির্দেশ দেন। কিন্ত  সেই নির্দেশনা মানেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে আবারো বই নিতে আসে শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনে প্রায় ১৪০ জন শিক্ষার্থী এক হাজার একশ টাকা করে জমা দিয়ে নতুন বই নেয়। বাকি প্রায় ২৬০ জন শিক্ষার্থী টাকা জমা না দেয়ায় তাদের বই দেয় নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।

৬ষ্ঠ শ্রেণিতে সদ্য ভর্তি হওয়া ৮২ জন ও ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪০০ এর বেশি শিক্ষার্থী বছরের প্রথম দিন বুধবার সকালে নতুন বই নিতে স্কুলে উপস্থিত হয়েছিলো। সঙ্গে অনেক অভিভাবক আসেন। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের অপেক্ষায় থাকে। বেলা ১১ টার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মি.কামেল মার্ডী বার্ষিক সেশন ফি এক হাজার ১০০ টাকা জমা না দিলে বই দেয়া হবে না বলে শিক্ষার্থীদের সাফ জানিয়ে দেন।

প্রধান শিক্ষকদের এমন ঘোষণায় হতভম্ব হয়ে যান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। অনেক অভিভাবক তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। ৪০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১২ জন প্রধান শিক্ষকের ঘোষণা অনুযায়ী এক হাজার ১০০ টাকা করে জমা দিয়ে বই পায়। সরকারি হওয়ায় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে বই বিতরণের দিন তিনি স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না।

অভিভাবকরা জানান, নতুন বই বিনামূল্যে সরকার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে অথচ তারা টাকা নিচ্ছে। সেশন ফি’র নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছেন তারা। এলাকার প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী গরীব। এক সঙ্গে এতো টাকা জোগাড় করে নতুন বই নেয়া সবার পক্ষে সম্ভব নয়। বইয়ের জন্য টাকা নেয়ার বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দাবি জানান তারা।

মুণ্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মি.কামেল মার্ডী জানান, স্কুল পরিচালনায় কিছু অর্থ প্রয়োজন হয়। তাই বই দিয়ে নয়, সেশন ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছে এক হাজার ১০০ টাকা করে চাওয়া হয়েছে। স্কুল কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া আমরা সেশন ফি কমাতে পারিনা। আর শিক্ষার্থীরা বই হাতে পেলে পরে টাকা দিতে চায়না । তাই নির্ধারিত সেশন ফি ছাড়া বই দেয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, মুণ্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে বই বিতরণকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্থানীয়রা তাকে জানিয়েছেন। প্রধান শিক্ষককে টাকা ফেরত দেয়ার নিদের্শ দিয়ে বই বিতারণ করতে বলা হয়েছে।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, সেশন ফি এর সঙ্গে বই বিতরণের কোন সর্ম্পক নেই। প্রধান শিক্ষককে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে টাকা ছাড়াই বই বিতরণ করতে। এর পরেও যদি টাকা নেয়া হয় তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030770301818848