নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের অজুহাতে উপজেলার শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত না নিয়ে বন বিভাগের মূল্য নির্ধারণ ছাড়াই ৬টি গাছ শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে কাটা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে গাছগুলো কাটার পর বেশ কিছু কাঠ সরিয়ে ফেলে কিছু কাঠ লোক দেখানোর জন্য জড়ো করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার তৎপর চালাচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার মালঞ্চা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের চতুর দিক দিয়ে অনেক পুরাতন কয়েকটি ইউক্যালিপটাস, কড়ই, আম, ও পাইকর গাছসহ অন্যান্য গাছ ছিল। আর ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক ও পথচারীরা গরমের সময় সেই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিত। স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওই গাছগুলো নিলামের জন্য গতমাসে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি আবেদন করলেও উপজেলা শিক্ষা কমিটির কোন মিটিং করেননি।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই, বনবিভাগ থেকে কোন মূল্য নির্ধারণ ও ছাড়পত্র না নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে গত ২ অক্টোবর টেন্ডার ছাড়াই ১টি আম গাছ , ২টি ইউক্যালিপটাস, ২টি পাইকড় ও ১টি ফল গাছ কেটে ফেলে গাছের অধিকাংশ ডালপালা ও কাঠের গুড়ি গোপনে সরিয়ে ফেলেছেন। শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে গাছগুলো কেটেছেন ঠিকাদারের লোকজন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সামিনা ইয়াসমিন বলেন, গাছ কাটার অনুমোদনের কাগজ আমি পাইনি। তবে শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে ঠিকাদারের লোকজন গাছগুলো কেটেছেন ।
গাছ কাটা বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রায়হান এর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, গাছ কাটতে খরচ হয় আর এই খরচের টাকা স্কুল দিতে পারেন না। তাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নির্দেশে আমাদের লোকজন গাছগুলো কেটেছে।
মালঞ্চা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিথুন বলেন, স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে গাছগুলো নিলামের জন্য আমরা একটি স্কুলে রেজুলেসান করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি দরখাস্ত গত মাসে প্রেরণ করেছিলাম। গাছগুলো কাটার কোন অনুমোদন পাইনি। গাছগুলো কাটতে দেখে আমি ঠিকাদারের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলে ঠিকাদারের লোক আমাকে বলেন শিক্ষা অফিসার নাকি গাছগুলো কাটতে বলেছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান বলেন, আমি ব্যস্ত থাকায় গাছগুলো নিলামের জন্য কোন প্রক্রিয়া করতে পারিনি। ঠিকাদারের পিড়াপিড়িতে আমি গাছগুলো কাটার নির্দেশ দিয়েছি।
উপজেলার বন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, গাছগুলো টেন্ডার করার জন্য তারা আমাদের অফিসে আগে কোন আবেদন করেননি ।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী অফিসার মাসুম আলী বেগ বলেন, উপজেলা শিক্ষা কমিটির অনুমোদন ও বন বিভাগের মূল্য নির্ধারণ ছাড়া যদি গাছগুলো কাটা হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।