স্কুল ফেলে শিক্ষকদের নির্বাচনী কাজ নয়: কলকাতা হাইকোর্ট

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নির্বাচনের কাজে স্কুল শিক্ষকদের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। কিন্তু কেন তাদের নির্বাচনী কাজ করতে হবে, ভারতে স্কুল শিক্ষকরা বহুদিন ধরেই সেই প্রশ্ন করে আসছেন। কলকাতা হাইকোর্ট এক নির্দেশে এবার শিক্ষকদের পক্ষে মত দিলেন।

আদালত এক রায়ে জানিয়েছেন, স্কুল চলাকালে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের ভোটের কাজে নিযুক্ত করা যাবে না। এক প্রাথমিক শিক্ষকের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন।

সুতন্ত্র হালদার নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের মামলায় আদালত এই নির্দেশ দেন। সুতন্ত্রের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, জাতীয় নির্বাচন কমিশন ২০ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকার কাজ চলবে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর কার্যালয় তার ভিত্তিতে সম্প্রতি বিডিও-দের নির্দেশ দেয়, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের ওই কাজে নিযুক্ত করতে হবে। নির্দেশে বলা হয়, অফিস ডে-তে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষকদের ওই কাজ করতে হবে। সেই নির্দেশের ভিত্তিতে বিষ্ণুপুরের বিডিও তার এলাকার প্রাথমিক শিক্ষকদের ভোটের কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন।

বিডিও-র নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর মামলা করেন সুতন্ত্র। আবেদনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, সরকারি কর্মীদের ভোট সংক্রান্ত কাজে লাগাতে হবে। তবে তাদের যদি পর্যাপ্ত সংখ্যায় পাওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের নির্বাচনের কাজে নিয়োগ করা যাবে।

সুতন্ত্রের আবেদনে আরও বলা হয়, শিক্ষার অধিকার ছাত্রছাত্রীদের মৌলিক অধিকার। শিক্ষকরা পাঠদানের দায়িত্ব পালন না করে যদি ভোটার তালিকার কাজ করতে থাকেন, তাহলে তো শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে।

রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী অফিসারের পক্ষে আইনজীবী দ্বৈপায়ন চৌধুরী বলেন- জনগণনা, নির্বাচন সংক্রান্ত কাজকর্ম এবং বিপর্যয়ের সময়ে বিভিন্ন কাজে প্রাথমিক শিক্ষকদের নিযুক্ত করা যায়।

আইনজীবী ফিরদৌস জানান, সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি চক্রবর্তী এ দিন আরও নির্দেশ দিয়েছেন, ভোটের কাজের ব্যাপারে বিষ্ণুপুরের বিডিও-কে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।

হাইকোর্টের এই নির্দেশের ব্যাপারে নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তী বলেন, স্কুল চলাকালে শিক্ষকদের যাতে ভোটের কাজে যুক্ত করা না হয়, সেজন্য দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছে। কেননা তাতে ক্ষতি হয় শিক্ষার্থীদেরই। উচ্চ আদালতের রায়ে স্বস্তি মিলেছে বলেও জানান সমর।

সূত্র : আনন্দবাজার


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050640106201172