টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কদমতলী হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতি সপ্তাহে বসে গবাদিপশুর হাট। ৩৬ বছর ধরে এই হাটের কার্যক্রম চলে আসছে। একদিকে চলে ক্লাস, অন্যদিকে মাঠের ভেতর চলে পশু কেনাবেচা। এতে করে শিক্ষার পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে।
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ঘাটাইল কদমতলী হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে সাতশ' শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতি রোববার পশুর হাট বসে। পশুর হাট বসার কারণে মাঠ জুড়ে গরু-ছাগলের বর্জ্য, ছোট-বড় গর্ত, নালা-নর্দমার সৃষ্টি হয়।
শ্রেণিকক্ষের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে পশুর মল ও খড়কুটার স্তূপ। ফলে পর দিন সোমবার স্কুল খুললেই ক্লাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টের ব্যাপার হয়ে ওঠে। খেলাধুলা তো দূরের কথা, মাঠ পার হয়ে স্কুলের বারান্দাতেও স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা দুষ্কর হয়ে পড়ে তাদের জন্য।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতি সপ্তাহে এই এলাকার কদমতলী স্কুল মাঠে সবচেয়ে বড় পশুর হাট বসে। যে কারণে অনেক গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া ওই হাটে কেনাবেচা হয়। গবাদিপশুর বর্জ্যের গন্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
কদমতলী হাসান পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, মাঠের মধ্যে পশুর মলমূত্র থাকায় খেলাধুলা করা যায় না। এ ছাড়া গন্ধে ক্লাস করা কঠিন হয়ে পরে।
অভিভাবক দেলোয়ার হোসেন বলেন, হাটকে কেন্দ্র করে প্রচুর অর্থনৈতিক লেনদেন হয়। যেখান থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটি, শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ভাগ পান। এসব সুবিধাভোগীর কারণে শিক্ষার্থীদের দুর্গন্ধের মধ্যেই ক্লাস করতে হয়।
তাদের অসুবিধা দেখার কেউ নেই। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অসুবিধা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে এ মাঠে পশুর হাট বসছে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৪ মার্চ হাট স্থানান্তরের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম। কিন্তু বিষয়টির কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হলেও স্কুলের লাভের বিষয় চিন্তা করে অন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে পাশেই একটি বড় পুকুর রয়েছে।
ওই পুকুর ভরাট করে পশুর হাট স্থানান্তর করা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, ৪০ বছর ধরে ওই বিদ্যালয় মাঠে এ হাট বসছে। হাটের কারণে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কোনো অসুবিধা হোক- এটা কেউ প্রত্যাশা করে না। তারা যদি হাট না চায় তাহলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে হাট সরিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেব।