স্কুলছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করুন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গত শুক্রবার মধ্যযুগীয় কায়দায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় গত রোববার রাতে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। গরু চুরির অপবাদে নির্যাতনের শিকার কিশোরের নাম রফিকুল ইসলাম (১৩)। সে দহবান ইউনিয়নের ধুমাইটারী গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, গাইবান্ধার কিশোর রফিকুলের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের খবরটি শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। অবশ্য এমন ঘটনার খবর আজকাল গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অহরহ চোখে পড়ে। বাস্তবতা হলো, সমাজে শিশু-কিশোর নির্যাতন নিয়মিতই হচ্ছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে। এবং নির্যাতন-নিপীড়ন কোন কোন ক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।

সমাজ অধঃপতনের কোন খাদে নামলে শিশুদের ওপর এ ধরনের নির্যাতন হতে পারে তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে। শিশুরা দুর্বল এবং তাদের রক্ষা করার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যেসব শিশুর ওপর নিপীড়ন বা নির্যাতন হচ্ছে, তারা প্রায় সবাই নিম্নবিত্ত পরিবারের। এখানে সামাজিক বিভাজন স্পষ্ট। আমাদের মধ্যে এখনও সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতা রয়ে গেছে। সমাজের দুর্বল অংশের আরও দুর্বল শিশুরা অরক্ষিত। এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি একে আরও প্রকট করে তুলেছে।

মানুষের মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলো কেন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সমাজই বা কেন শিশুদের সুরক্ষা দিতে পারছে না, আইনি ব্যবস্থা তথা যাদের বিষয়গুলো দেখার বা প্রতিহত করার দায়িত্ব তারা থাকার পরও কেন একই ধরনের অপরাধ বারবার সংঘটিত হচ্ছে- এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। বিষয়গুলোতে এখনই মনোযোগ দেয়া দরকার।

পুলিশ, বিচার ব্যবস্থা, সামাজিক পরিস্থিতি- কোনটাই শিশুর পক্ষে নয়। শিশু নির্যাতন বন্ধে আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। কোন সামাজিক বা সংবাদ মাধ্যমের চাপ সৃষ্টি না হলে আইন কাজ করে না। অথচ আইনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করার কথা। এটা তখনই কাজ করবে, যখন ব্যাপকভাবে সামাজিক সচেতনতা গড়ে উঠবে। আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন হবে।

অসহায় শিশু-কিশোরদের প্রতি মানুষকে আরও সহানুভূতিশীল হতে হবে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে শিশু নির্যাতনের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক শিশুকে দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে।

কোন শিশুই অপরাধী হয়ে জন্মায় না। কোন ব্যক্তি বা শিশু অপরাধ করলে তার জন্য আইন আছে, তার অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থাও আছে। আইনের পথে না গিয়ে কেউ যদি আইন হাতে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে, সে অনাচারও কঠোর হস্তে দমন করা উচিত।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031750202178955