বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে এক দুর্বৃত্ত। গত বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বাবা থানায় অভিযোগ দিতে চাইলে স্থানীয় মাতবররা যেতে দেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে মাতবরদের চাপের মুখে গত শুক্রবার শিক্ষার্থীর পরিবারকে প্রহসনের সালিশ বৈঠকে আসতে বাধ্য করা হয়। সেখানে লোক দেখানো জুতাপেটা করেই অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার দিন ঘরে একা পেয়ে ঐ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় পাশের বাড়ির ভ্যানচালক শ্যামল মল্লিকের বখাটে ছেলে পলাশ মল্লিক। মেয়েটির চিৎকারে পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে মেয়েটিকে পলাশের হাত থেকে উদ্ধার করেন। রাতে মেয়ের বাবা বাড়ি ফিরলে ঘটনা শুনে আইনের আশ্রয়ে যাবার কথা জানালে স্থানীয় মাতবররা বিচার করে দেয়ার কথা বলে তাকে থানায় যেতে বারণ করেন। মাতবরদের চাপের কারণে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেননি।
ঐ ঘটনা এলাকায় জানাজানির পর শুক্রবার বিকালে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে অভিযুক্তের কাকা হরবিলাস মল্লিক পলাশকে জুতাপেটা করে রক্ষা করেন। সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মাতবর আব্দুর রব হাওলাদার কালাই, মার্সেল হাওলাদার, রনজিত কর প্রমুখ। বৈঠক সূত্র জানায়, মেয়ের বাবাকে চাপের মুখে রেখে প্রকাশ্যে কোনো বিচার না করেই সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তবে আব্দুর রব হাওলাদার কালাই জানান, তিনি সালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিষয়টি তিনি জানেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনা জেনে এসআই দেলোয়ার হোসেনকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের কোনো ঘটনা সালিশযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা তাকে কেউ জানায়নি। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরে মেয়ের বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। মেয়ের বাবা মাতবরদের নিয়ে থানায় আসবেন বলে তাকে জানিয়েছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন জানান, এ রকম কোনো বিষয় তার জানা নেই। তবে মেয়ের পরিবার অভিযোগ নিয়ে আসলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা আইনগত সহযোগিতা চাইলে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করা হবে।