শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বখাটে মোমিন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে। উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ছাতিয়ানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ডামুড্যা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ছাত্রীর মা।
মামলার আসামি বখাটে মোমিন ব্যাপারী উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরধানকাঠি গ্রামের জয়নাল ব্যাপারীর ছেলে।
পুলিশ, ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ডামুড্যা উপজেলার ছাতিয়ানি এলাকার এক কৃষকের ১৫ বছরের মেয়ে ও কনেশ্বর এস.সি এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী গত ৩০ জুলাই সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বিদ্যালয় যাচ্ছিল। এ সময় ওঁৎ পেতে থাকা বখাটে মোমিন ব্যাপারী পিছন থেকে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে নৌকায় তুলে নিয়ে চরধানকাঠি গ্রামের হাসান ব্যাপারীর পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকার করলে সাহিদা বেগমসহ স্থানীয় কয়েকজন নারী তাকে উদ্ধার করে। ঘটনার পর বখাটে মোমেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিচার পেতে ৩১ জুলাই স্থানীয় মাতব্বর-সালিশদারদের বিষয়টি জানায় ছাত্রীর পরিবার। কিন্তু স্থানীয় মাতব্বর-সালিশদাররা থানায় মামলা করবে বলে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে ৭ হাজার টাকা নেয়। টাকা নিয়ে বখাটের বিরুদ্ধে মামলা দিবে বলে তালবাহানা শুরু করে। পরে মেয়ের মা শরীয়তপুর আদালতে বখাটে মোমেন ব্যাপারী ও সহযোগী তার চাচাতো ভাই আবু ব্যাপারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলা হওয়ার পর ৭ আগস্ট ডামুড্যা থানায় আরেকটি মামলা হয়। ১৭ আগস্ট পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে।
কনেশ্বর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সাজ্জাৎ আলী সাজু বলেন, ঘটনা আরও আগে ঘটেছে। স্থানীয় সালিশদের জন্য মামলা করতে দেরি হয়। পরে ওই মেয়ের পরিবার আমার কাছে আসে, আমি কোর্টে মামলা করার কথা বলি। মেয়েটিকে যে ক্ষতি করেছে তার সঠিক বিচার হোক।
ছাত্রীর বাবা বলেন, জয়নাল ব্যাপারীর ছেলে মোমেন ব্যাপারী আমার মেয়ের ক্ষতি করেছে। আমি একজন কৃষক। বিচার পেতে স্থানীয় সালিশদের কাছে গেলে তারা ৭ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু তাদের কাছে গিয়ে বিচার পাইনি। তাই মোমেন ও তার চাচাতো ভাই আবুর বিরুদ্ধে থানায় ও কোর্টে মামলা করেছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
তিনি বলেন, আমার একটা মাত্র মেয়ে। ওর ক্ষতি হয়ে গেল। আমি গ্রামে মুখ দেখাবো কীভাবে?
ওই ছাত্রী বলেন, মোমেন ব্যাপারী গামছা দিয়ে পিছন থেকে আমার চোখ বেঁধে নৌকায় তোলে। পরে একটি ঘরে নিয়ে আমার সাথে খারাপ কাজ করে। আমি চিৎকার করলে গলা টিপে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
ডামুড্যা থানা পুলিশের (ওসি তদন্ত) ইমারত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। মামলার পর মেয়েটিকে পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।