চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে অলি উল্লাহ পাবেল (২৪) নামে এক বখাটে যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর পিতা বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাতে অভিযুক্ত পাবেল ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে হাটাহাজারী মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই মামলার সূত্র ধরে উক্ত ঘটনায় সহযোগিতার জন্য পাবেলের আপন বড় ভাই হাবিবুল্লাহ রুবেলকে (২৮) আটক করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। পাবেল ও রুবেল হাটহাজারী পৌর এলাকাধীন পশ্চিম দেওয়ান নগর খেরু পাড়া ভোলা হাজীর বাড়ির মৃত জাকির হোসেনের পুত্র।
ছাত্রীর পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই শিকার ওই স্কুল ছাত্রী হাটহাজারীর একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। গত ২৪ জুন সকালে সে স্কুলে যাওয়ার পথে পাবেল তাকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে রিক্সায় তুলে। পরে তাকে ফুসলিয়ে হাটহাজারী পৌর এলাকার একটি ৪র্থ তলা ভবনে নিয়ে যায়। ওই ভবনের ৪র্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে অজ্ঞাতনামা দুই মহিলার সহযোগিতায় তাকে রুমে প্রবেশ করিয়ে দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
এক পর্যায়ে মেয়েটি অজ্ঞান হলে পাবেল তার মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। জ্ঞান ফিরে আসলে দুপুর আড়াইটার দিকে পাবেল এ ঘটনা কাউকে প্রকাশ করলে ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে একটি অটোরিক্সাযোগে ছাত্রীটিকে তার ঘরে পাঠিয়ে দেয়।
পরে শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে তার মা ও বড় বোনকে সে বিষয়টি প্রকাশ করে। এ নিয়ে ছাত্রীটির পরিবার পাবেলের বড় ভাই রুবেলের নিকট ঘটনাটি বলে। রুবেল বিষয়টি কাউকে না জানানোর অনুরোধ জানিয়ে পাবেলের উপযুক্ত বিচার ও মিমাংসা করে দেবে বলে তাদের আশ্বস্থ করে। কিন্তু সে বারবার সময় নষ্ট করার একপর্যায়ে গত ১৭জুলাই ছাত্রীর পিতা রুবেলের দোকানে আবারো যায়। এসময় তারা উভয় ভাই দোকান থেকে পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে মুঠোফোনে কথা হলে রুবেল ছাত্রীর পিতাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে উল্টো তাদের প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে। কোন উপায় না দেখে বৃহস্পতিবার সকালে পাবেল, রুবেল ও অজ্ঞাতনামা দুই মহিলার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন ছাত্রীর পিতা।
এদিকে মামলা রুজুর পরপরই হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম, থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহির উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাটহাজারী বাসস্টেশন এলাকা থেকে রুবেলকে আটক করে। তবে মূল আসামী ধর্ষক পাবেল ও অজ্ঞাতনামা দুই মহিলাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ঘটনার পরপর ধর্ষণকারী পলাতক থাকায় মামলার প্রধান আসামী ধর্ষকের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে ধর্ক্তাষণের শিকার ওই ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে প্রেরণ করা হয়েছে জানান হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাংগীর। তিনি আরো জানান, মামলা মামলা দায়েরের পরপরই রুবেলকে আটক করেছি। ধর্ষণে অভিযুক্ত পাবেল ও অজ্ঞাতনামা দুই মহিলাকে আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।