স্কুলমাঠে প্রধান শিক্ষকের ধানচাষ!

মিলন রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) |

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মকুমা সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের মাঠে আউশ-আমন ধান চাষ করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, শরীর চর্চা ও বিনোদনের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাঠ থাকা বাধ্যতামূলক থাকলেও এখানে তার ব্যতিক্রম। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত লাভের আশায় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মাঠে ধান আবাদ করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত মকুমা গ্রামে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ৫০ শতক জমির ওপর ১০০ নং মকুমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির জন্মলগ্ন থেকে মাঠে ধান চাষ করছেন প্রধান শিক্ষকের পিতা ও জমিদাতাগণ। স্কুলের সামনে একটু ফাঁকা জমি রেখে বাকি জমির দক্ষিণ পাশে কেবল আমন ধানের সবুজের সমারোহ। বর্তমানে ১০ শতাংশের উপরে বিদ্যালয়টি থাকলেও বাকি জমিতে চলছে ধান চাষ। এই বিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষক এবং সব মিলিয়ে ৪৮ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।

দেখা গেছে, এর মধ্যে পঞ্চম ও চতুর্থ শ্রেণিতে ২ জন করে ৪ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল এবং ৩য় শ্রেণিতে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় ৬ জন থাকলেও একজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল না। বিদ্যালয়টি দক্ষিণমুখী হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলার সময়ে মুক্ত আবহাওয়া প্রাপ্তি, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, ক্রীড়া-বিনোদনের জন্য বিশাল মাঠ থাকলেও বর্তমানে আমন ধানের মাঠ ভরপুর। মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গেলে এবং কোন জাতীয় অনুষ্ঠান হলে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের কাজটা বিদ্যালয়ের বারান্দায় কোন রকমে দায়সারা ভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, তারা  কোন ধরনের খেলাধুলা করতে পারে না।  বিদ্যালয়ে ঠিক মতো ক্লাশ না নেয়ার ফলে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়গুলোতে গিয়ে ভর্তি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের পাশে একটি টিনের ঘর ছিলো তাও আর নেই। এসব অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।

 বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম মৃধা বলেন, বিদ্যালয় ভবন ছাড়া অন্য জমিতে ধান চাষ করা হচ্ছে। চাষকৃত লাভের টাকা দিয়ে মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ের চেয়ার-টেবিল মেরামতসহ নতুন মালামাল ক্রয় করা হয়। এতো জমি বিদ্যালয়ের কোন কাজে আসে না তাই মাঠে ধান চাষ করছি। শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম থাকার ব্যাপারে বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে একাধিক স্কুল থাকা এবং বিদ্যালয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা নাজুক থাকায় শিক্ষার্থী উপস্থিতির সংখ্যা কম।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম কুমার কুণ্ডু দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে ধান চাষ করা হচ্ছে এটা আমার জানা ছিল না। সরেজমিনে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028181076049805