স্কুল চত্বরে পুলিশ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর দাঁড়িভিট হাইস্কুলে। সংঘর্ষে পুলিশ ও শিক্ষার্থী মিলিয়ে আরও ৯ জন আহত হয়েছে।
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একটা সমস্যা চলছিল। সম্প্রতি তিনজন শিক্ষক নিযুক্ত হলেও তাঁদের নিয়োগের বিরোধিতা করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা সেই শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ স্কুলে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। নবনিযুক্ত শিক্ষকরা উর্দু ভাষার। পড়ুয়াদের দাবি, ওই স্কুলে উর্দুর ছাত্র-ছাত্রীই নেই। তারা অন্য বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের দাবি করে। তদের দাবি, স্কুল প্রাথমিক ভাবে আশ্বাস দিয়েছিল যে ওই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে না।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় থানার পুলিশ ওই তিন শিক্ষককে নিয়ে যান স্কুলে। কিন্তু তাঁদের ঢুকতে দিতে অস্বীকার করেন পড়ুয়ারা। তারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুলিশ তাদের সরাতে গেলে শুরু হয়ে যায় সংঘর্ষ। কয়েক মূহূর্তের মধ্যে সেই সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। পুলিশের অভিযোগ, পড়ুয়ারা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইট বৃষ্টি করতে শুরু করে। প্রথমে পিছু হটে পুলিশ। খানিক সময় পরে আশ পাশের বিভিন্ন থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাস এবং রবার বুলেট ছুঁড়তে শুরু করে মারমুখী পড়ুয়াদের দিকে। কার্যত রণক্ষেত্রর চেহারা নেয় স্কুল চত্বর। পড়ুয়া এবং পুলিশ দু’পক্ষেরই অনেকে আহত হন। ৩ জন পুলিশকর্মী ছাড়াও আরও ৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষের মধ্যেই রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন এক তরুণ। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা বলেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ওই তরুণ। তাঁকে রাজেশ সরকার বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। বর্তমানে ইসলামপুর আইটিআই কলেজে পাঠরত। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণের।
পুলিশ যদিও গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তাঁরা দাবি করেছেন যে রবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছাড়া তাঁরা কিছু ব্যবহার করেননি। তাহলে রাজেশ কার গুলিতে মারা গেলেন সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
সূত্র : আনন্দ বাজার