কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ মরা নদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনশেড ভবন মেরামতের কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় তা বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ। মঙ্গলবার (৫ জুন)সরজমিনে গিয়ে মেরামতের কাজে ৩য় শ্রেণির ইট, বালু বেশি সিমেন্ট কমসহ ১৬ এমএম ঢেউটিনকে রং দিয়ে ৪৬ এমএম বানিয়ে টিনশেড ঘরের চালায় লাগানোর সত্যতা পাওয়া গেছে। ঠিকাদারের লোকজন ছাড়া তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা উপজেলা এলজিইডির কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ওই এলাকায় পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাক্কলন বহির্ভূত কাজ করছে। বর্তমানে স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ৮ লাখ ৯০০ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনশেড ভবন মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সে অনুযায়ী মেসার্স সাগর কনস্ট্রাকশন, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম ২৭% ছাড়ে কাজটি করার জন্য ৫ লাখ ৯০ হাজার ৫৭০ টাকা চুক্তি সম্পাদন করে।
চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয় এবং ১১ মের মধ্যে কাজ শেষ করার থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অদ্যাবধি কাজটি শেষ করতে পারেনি। কিন্তু ২৭ মে প্রথম কিস্তির ২ লাখ ৭০ হাজার ৩১২ টাকা বিল উত্তোলন করে সাগর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী গোলমা মোস্তফা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পেরে শেষে তাড়াহুড়া করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে। পরে এলাকাবাসীর তোপের মুখে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
এ প্রসঙ্গে সাগর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী গোলমা মোস্তফার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শিডিউল অনুযায়ী কাজ বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব উপজেলা প্রকৌশলীর। আমার করার কি আছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আন্জু আরা, আব্দুল লতিফ জানান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কোনো অফিসার কাজ পরিদর্শনে আসেন না। তাই ঠিকাদারের লোকজন নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছে। আমরা বাধা দেওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করে পালিয়েছে।
উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের ঢেউটিন সরিয়ে প্রাক্কলন অনুযায়ী ঢেউটিন লাগানোর জন্য বলা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম যোগসাজশের কথা অস্বীকার করে জানান, তদন্তপূর্বক প্রাক্কলন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।