রাজশাহীর সরকারি হাই স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে সরকারি কলেজে। পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষকরা। খাতা মূল্যায়ন ও সম্মানী বণ্টনের কাজটিও করবেন তারা। জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জেনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, রাজশাহী মহানগরীর ৬টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ভর্তির পরীক্ষা আগামী ১৭ ডিসেম্বর রাজশাহী কলেজ ও নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজে অনুষ্ঠিত হবে। বহু বছর ধরে এই পরীক্ষা ওই স্কুলেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
জেলা প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত জানতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে শিক্ষকরা অবস্থান নেন। পরে তারা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। এসময় নগরীর ছয়টি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইমতেয়াজ আলী খান দৈনিক শিক্ষাকে জানান, যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা অমর্যাদাকর। মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নেকবর আলী বলেন, আগের মতই পরীক্ষাগুলোর সার্বিক কার্যক্রম চালানো হোক।
শিক্ষকরা বলছেন, ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য ১৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। সে কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। কিন্তু জেলা প্রশাসক কমিটিকে না জানিয়ে কোনো মিটিং ছাড়াই এককভাবে কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অথচ এর আগের সব ভর্তি পরীক্ষা সরকারি বিদ্যালয়গুলোতেই অনুষ্ঠিত হতো। সারা বাংলাদেশেও তাই হয়ে আসছে। অথচ রাজশাহীতে নেওয়া হবে কলেজে।
রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের এক শিক্ষক বলছেন, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ বিদ্যালয় প্রধানের নেতৃত্বেই অনুষ্ঠিত হবে। আর যেহেতু ভর্তি পরীক্ষা কমিটিতে ১৩ জন সদস্য আছেন, তাদের না জানিয়ে কমিটির কোনো মিটিং ছাড়াই জেলা প্রশাসক একক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আমরা পড়াব, আর পরীক্ষা নেবেন কলেজের শিক্ষকরা সেটা কি ঠিক?
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নজরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নির্বিঘ্নে হয়, সেইজন্যই রাজশাহী কলেজ ও নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা অপমানিত বোধ করেছেন কি না সেটা আমাদের জানা নেই। আমাদের কেউ জানাননি।