এমপিওভূক্তির জন্য যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালিকাভূক্ত হয়েছে এবং তার মধ্যে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে বিতর্কিত কিংবা স্বাধীনতাবিরোধী কোন ব্যক্তির নামের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সে সকল প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
গত বছরের অক্টোবর মাসে ২ হাজার ৭২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। যেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি রাজাকার, শান্তিকমিটির সদস্য ও যুদ্ধাপরাধের মামলা থাকা ব্যক্তিদের নামে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এ নিয়ে দৈনিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল গণামধ্যমে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর দাবি ওঠে এসব প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের।
আরও পড়ুন : বিএনপি-জামাত ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে ডজনেরও বেশি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত
মন্ত্রী সংসদকে জানান, এটি অত্যন্ত দু:খজনক যে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য চলমান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলে কোন কোন প্রতিষ্ঠান এখনও এধরণের বিতর্কিত ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের লিখিত জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, মাধ্যমিক স্তরের নবম-দশম শ্রেণীতে গ্রুপ বা বিভাগ না রাখার চিন্তা ভাবনা চলছে, এক্ষেত্রে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী একই বিষয়ের উপর শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে তাদের ভিতকে মজবুত করে একাদশ শ্রেণী থেকে গ্রুপ বা বিভাগ ভিত্তিক লেখাপড়া করার সুযোগ থাকবে।
মন্ত্রী জানান, তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক বিষয়স্তু ৮ম শ্রেণীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ৯ম-১০ম শ্রেণীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ৯ম-১০ম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং ৯ম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের গত আমলে শিক্ষা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে আইন প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে আশা করা যায়, অবিলম্বে শিক্ষা আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে সংসদে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে।
জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, কলেজের শিক্ষা সময় দৈনিক (সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত) ৮ ঘন্টা। শুরুর সময় সকাল ৯টা এবং শেষ সময় বিকাল ৫টা।
শিক্ষামন্ত্রী সংসদকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আরও ৫৫৬টি মাদরাসা এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়াধীন আছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদকে এ তথ্য জানান তিনি। সাংসদ এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, “বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত মাদরাসার সংখ্যা ৭ হাজার ৬২৪টি এবং এমপিওবিহীন মাদরাসার সংখ্যা এক হাজার ৯১২টি। এমপিওভুক্ত মাদরাসার ছাত্র সংখ্যা ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৮১২ জন, ছাত্রী এক লাখ ১৮ হাজার ৫১ জন। এমপিওবিহীন মাদরাসায় ছাত্র সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজার ৭২৪ জন ও ছাত্রী এক লাখ ৮৭ হাজার ৮৯ জন।