করোনা মহামারীর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে যা আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে। কিন্তু সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় বেশ কিছু কিন্ডার গার্টেন ও একটি ক্যাডেট মাদরাসায় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নিয়মিত পাঠদান চলছে। শিক্ষার্থীদের কারও মুখে মাস্ক নেই, একই বেঞ্চে ৩ জন করে শিক্ষার্থী গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করছে।
সরেজমিন পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের চৌধুরানী বাজার জিনিয়াস কোচিং সেন্টার, তছিরুন্নেছা কিন্ডার গার্টেন, অন্নদানগর ইউনিয়নের মোমিন বাজারে অবস্থিত আল হেলাল ক্যাডেট মাদরাসায় গিয়ে দেখা গেছে, সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, এক বেঞ্চে পাশাপাশি তিনজন করে শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে বসিয়ে রাখা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখারও প্রয়োজন মনে করছেননা তারা। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, তাদের বাবা-মাকে জোর করে স্কুলে আসতে বাধ্য করেছে কতৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে আল হেলাল ক্যাডেট মাদরাসার পরিচালক মাওলানা ইসরাফিল আলম হেলালী বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি। কারণ আমার মাদরাসায় হেফ্জ বিভাগ চালু থাকায় মাদরাসা খোলা রেখেছি। অথচ আল হেলাল ক্যাডেট মাদরাসার প্রতিটি ক্লাস পরিদর্শনে দেখা যায়, হেফ্জ পাঠদানের পরিবর্তে সরকারি সিলেবাস অনুযায়ী পাঠদান চলছে। ওই মাদরাসায় পিইসি পরীক্ষার জন্য ১৫ জন ও জেডিসি পরীক্ষার জন্য ৮ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। একইভাবে জিনিয়াস কোচিং সেন্টারের পরিচালক সাব্বির আহমেদ মোবাইল ফোনে বলেন, আমার কোচিং সেন্টার ৩ দিন আগে বন্ধ করে দিয়েছি। অথচ সরেজমিনে গত ২১ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ ঘটিকায় সেখানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত পাঠদান চলছে। তছিরুন্নেছা কিন্ডার গার্টেনের পরিচালক পিনু বলেন, আমরা শুধু প্রাইভেট পড়াচ্ছি। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, সেখানেও নিয়মিত ক্লাস চলছে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ক্লাশ করাতে বাধ্য করছে শিক্ষার্থীদের। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মুখে মাস্ক পরা এসব কিছুই মানছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সুজা মিয়া বলেন, আমরা সরকারের বাইরে নই। যদি কেউ সরকারি নিষেধাজ্ঞার পরেও প্রতিষ্ঠান চালায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অন্যদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতিকুর রহমান কিন্ডার গার্টেন স্কুলের ব্যাপারে বলেন, আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়ার পরেও যদি কেউ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে শিক্ষা কর্মকর্তারা মুখে বড় বড় কথা বললেও কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীদের স্বজন ও এলাকাবাসী।