মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ শহর। দিনটি ছিল মঙ্গলবার। ঘড়িতে তখন স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টা। প্রতিদিনের মতোই বাংলাদেশি চার সহোদর বোন একে অপরের হাত ধরে প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে যাচ্ছিল। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! সেদিন আর তাদের পড়তে যাওয়া হলো না। চিরতরে প্রাণটাই চলে দু’জনের।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) শারজাহর আল গোবাইবা (আবাসিক) এলাকায় একটি ল্যান্ড ক্রুজারের ধাক্কায় এ দুই সহোদর বোন নিহত হয়। বিষয়টি দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে নিশ্চিত করেন নিহতদের মামা আমিরাত প্রবাসী মো. হামিদুর রহমান বাহাদুর।
তিনি জানান, নিহত একজনের নাম তাজবিয়া (১৬)। সে ছিল চার বোনের মধ্যে সবার বড়। তাজবিয়া শারজায় ইন্ডিয়ান একটি গ্রামার স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। অন্যজন একই স্কুলের কেজি ওয়ানের ছাত্রী তাউজিয়া (৬)। সে পরিবারের সবার ছোট। নিহতদের বাবা মোহাম্মদ ইকবাল ৩ যুগ ধরে শারজার একজন সফল ব্যবসায়ী। সপরিবারে শারজাতেই বসবাস করছেন। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের ফতেয়াবাদ বটতলী এলাকায়।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হামিদুর রহমান বাহাদুর এ প্রতিবেদককে জানান, ঘটনার দিন চার বোন প্রতিদিনের ন্যায় রাস্তা পার হয়ে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল। বাসা থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল তারা। এ সময় বেপরোয়া গতির একটি ল্যান্ড ক্রুজার ধাক্কা দিলে দুই সহোদর তাজবিয়া ও তাউজিয়া রাস্তায় ছিটকে পড়ে। মাথায় প্রচণ্ড আঘাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আমিরাত পুলিশ ল্যান্ড ক্রুজারের ঘাতক চালককে আটক করেছে। চালক সংযুক্ত আরব আমিরাত শারজাহ আল-গোবাইবা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। বর্তমানে ওই চালক পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় নিহতদের জানাজার নামাজ শেষে শারজাহ এলাকার সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনার খবরে তাদের গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলে জানান নিহতের নানা হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এস এম মো. মোরশেদ আলম চৌধুরী।