হঠাৎ এসএসসির উপকেন্দ্র পরিবর্তন

সাইফুর রহমান সাইফ, যশোর |
বাংলা প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা নেযার পর হঠাৎ করে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসির উপকেন্দ্রটি পরিবর্তন করা হয়েছে। রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে উপকেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়। ফলে পরীক্ষার্থীদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে।
 
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের  পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এতে ছাত্র-ছাত্রীদের মনের ওপর প্রভাব পড়বে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এক জায়গায় পরীক্ষা চলছিল। বাংলা পরীক্ষাতো হয়েছে। কোন অসুবিধা হয়নি। তবে কেন উপকেন্দ্র পরিবর্তন করতে হলো?
 
তিনি আরো বলেন, পরিবর্তন করতে হলে যখন সমন্বয় সভা হয় তখন করলে কোন সমস্যা হতো না।  
 
আগামীকাল মঙ্গলবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি ) থেকে মূলকেন্দ্র নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সম্প্রসারিত কেন্দ্র নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষার অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
 
নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ওই উপকেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিব মো. নূরুজ্জামান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান,  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে হঠাৎ করে এই উপকেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে কারিগরি কেন্দ্র বহাল রয়েছে। 
 
চলতি এসএসসি পরীক্ষায় নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের উপকেন্দ্রে উপজেলার সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোট ৪৫৬ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।  এছাড়া কারিগরি(ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উপজেলার পাঁচটি বিদ্যালয়ের ২৩০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। দুইটা পরীক্ষার পর হঠাৎ করে এসএসসি পরীক্ষার উপকেন্দ্র পরিবর্তন করায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
 
নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ওই উপকেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্রসচিব মো. নূরুজ্জামান জানান, ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই উপকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে আসছে। পরে এখানে জেএসসি উপকেন্দ্রও হয়েছে। চলতি এসএসসি ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় উপকেন্দ্রটিতে ৪৫৬ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি এবং ২৩০ জন পরীক্ষার্থী ভোকেশনাল পরীক্ষা দিচ্ছে। 
 
গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কেন্দ্রসচিব, সহকারী কেন্দ্রসচিব এবং উপজেলার সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের উপকেন্দ্র পরির্তনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
 
গত ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে  উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উপকেন্দ্রে আসেন। তিনি উপকেন্দ্র পরিবর্তন করার নোটিস পরীক্ষার্থীদের দিতে বলেন। তাঁর নির্দেশে রোববার পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে পরীক্ষার্থীদের উপকেন্দ্র পরিবর্তনের নোটিস দেয়া হয়। সে অনুযায়ী পরবর্তী পরীক্ষা থেকে তিনটি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবং চারটি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারিত কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। পরে উপকেন্দ্র থেকে ৩০টি বেঞ্চ মূল ও সম্প্রসারিত কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
 
এ ব্যাপরে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীনুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এসএসসি পরীক্ষার মূলকেন্দ্র নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আর ভেন্যুকেন্দ্র নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়। এক সময় অনেক পরীক্ষার্থী ছিল এই জন্যে বেশি ভেন্যুর প্রয়োজন ছিল। এখন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম। বাড়তি ভেন্যুর কোনো প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া, মূলকেন্দ্র থেকে ভেন্যুকেন্দ্র কিছুটা দূরে অবস্থিত। পরীক্ষা শুরুর আগে মূলকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র খোলা হয়। পরে খোলা প্রশ্নপত্র ভেন্যুকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে ঝুঁকি থাকে। মূলকেন্দ্রে অনেক কক্ষ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কেন্দ্র এক জায়গায় হলে সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে কারিগরি কেন্দ্র রাখা হয়েছে।
 
হঠাৎ করে পরীক্ষার মাঝে উপকেন্দ্র পরিবর্তন করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অভিভাবকেরা। উপজেলার পায়রাহাট গ্রামের অভিভাবক  আজিজুর রহমান বলেন, কী এমন ঘটলো যে পরীক্ষার মাঝে উপকেন্দ্র পরিবর্তন করতে হবে? পরিবর্তকন করলে পরীক্ষার আগেই করতো। ছেলেটার মন খারাপ। পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি এসে বলছে, আর পরীক্ষা ভালো হবে না।
 
সমশপুর গ্রামের অভিভাবক নাজমুল হক বলেন, বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা দিয়ে এসে মেয়ে কান্নাকাটি করছে। বলছে, এখানে তো কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না। তবে কেন্দ্র পরিবর্তন করা হলো কেন?

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053110122680664