হতাশায় ভুগছেন হরিপুরের ১১০ এসিটি শিক্ষক

হরিপুর (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধিঃ |

সেকেন্ডারী এডুকেশন কোয়ালিটি এন্ড অ্যাকন্সেস এনহান্সমেন্ট (সেকায়েপ) প্রকল্পের মেয়াদ শেষে হতাশায় ভুগছেন ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় ৩৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১০ জন এসিটি শিক্ষক। অধিকাংশ শিক্ষকের সরকারি চাকরির বয়স সীমাও পার হয়ে গেছে। প্রকল্প এবং চাকরি নবায়ন না হওয়ায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস আর ফারুক দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, এ বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে আনতে আমরা কথা বলেছি। এসইডিপি নামে ৫ বছর মেয়াদী একটি নতুন প্রোগ্রাম চালু হচ্ছে। এখানে এসিটি শিক্ষকদের কে পুন:ভাবে বহালের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। তবে সময় লাগবে।

জানা যায়, শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে সেকায়েপ প্রকল্পের আওতায় ৩৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১০ জন অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি) পাঠদান দিয়ে আসছেন। প্রকল্পের মেয়াদ গত বছরের ডিসেম্বর শেষ হওয়ায় এসিটি শিক্ষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। নিয়োগ দেওয়ার সময় প্রকল্প সফল হলে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এসিটি শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তি করা হতে পারে। অথবা নতুন প্রকল্পে সরাসরি অন্তরভুক্ত করা হবে বলে প্রকল্পের এসিটি নীতিমালায় উল্লেখ ছিল। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার একা মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

সেকায়েপ প্রকল্পের অধিনে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় এডিশনাল ক্লাস টিচার (অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক) এসিটি হিসাবে নিয়োগ পান এসব শিক্ষক। মাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজি, গনিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া রোধ, প্রাইভেট কোচিংয়ের প্রতি বিমুখ করে বিদ্যালয়মুখি করে গড়ে তোলাই ছিল এ প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য। সে মোতাবেক এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া মেধাবীদেরই নিয়োগ দিয়ে এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাস থেকে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস ছাড়াও মাসে অন্তত ১৬ টি অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে বিদ্যালয় গুলোকে ফলাফলের সফলতায় পৌঁছে দিয়েছেন।

হরিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াছিন খান, হরিপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন, হরিপুর আলিম মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মাও: মফিজুল ইসলাম কাদেরী বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব শিক্ষকের ক্লাস নেওয়ার কলা কৌশল ছিল ভিন্ন ধরণের। অমনোযোগী ও দুর্বল শিক্ষার্থীরাও পড়াশুনায় মনোযোগী হয়ে উঠতো। গরিব অসহায় ও দুর্বল শিক্ষার্থীর টাকা খরচ করে বাইরে কোচিংয়ের দরকার পড়তো না। সে কারণে এসব শিক্ষকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রয়োজন রয়েছে। সরকার এসব শিক্ষকের চাকরি নবায়নের ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আবারও শিক্ষক সংকটসহ পাঠদানের ব্যাঘাত ঘটবে।

কামারপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের এসিটি শিক্ষক শাহাজালাল, আমগাঁও জামুন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ে এসিটি শিক্ষক মুসা আলী, তোররা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের এসিটি শিক্ষক আল-মোমিন তারা সকলেই বলেন, প্রকল্প শেষে নতুন ভাবে চাকুরি নবায়ন না হওয়ায় আমাদের পরিবারের সবাই হতাশায় দিন কাটাচ্ছি। আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ হলে শিক্ষার্থীরা যেমন উপকৃত হবে, আমরাও বেকার জীবন থেকে মুক্তি পাবো।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024139881134033