হাজারো শিক্ষার্থী শেয়ার করছেন স্কুলে যৌন হয়রানির কথা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

sexual-harassmentস্কুল-কলেজে যৌন হয়রানির ঘটনা বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে। সেক্স অ্যান্ড রিলেশনশিপ এডুকেশন (এসআরই) নামের একটি যৌন নিপীড়ন বিরোধী গ্রুপ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। তাদের আহ্বানেই সোশাল মিডিয়ায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন।

ইন্ড ভায়োলেশন অ্যাগেইনস্ট ওমেন কোয়ালিশন-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছেন এভরিডে সেক্সিজম প্রজেক্টের প্রতিষ্ঠাতা লরা বেটস। তিনি ভুক্তভোগীদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে বলেছেন।

হ্যাশট্যাগে অসংখ্য মানুষ পরামর্শ চাইছেন। স্কুল-কলেজে মেয়েরা ধর্ষণের হাত থেকে কিভাবে রেহাই পেতে পারেন তার জন্য পরামর্শ দরকার। অনেকে এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধির জন্য যৌনশিক্ষার অভাবকে দায়ী করেছেন।

একজন টুইট করেছেন, আমাকে এসব বিষয়ে স্কুলে কোনো শিক্ষা দেওয়া হয়নি। হয়রানিমূলক সম্পর্ক বোঝার লক্ষণগুলো আমাদের শেখানো হয়নি।

আরেক ভুক্তভোগী লিখেছেন, নিপীড়নমূলক আচরণ নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাকে পোশাক নির্বাচনের বিষয়ে আরো শালীন হওয়ার পরামর্শ দেন।

ব্রিটেনের এডুকেশন সেক্রেটারি অ্যান্ড মিনিস্টার ফর ওমেন অ্যান্ড ইক্যুয়ালিটিস জাস্টিন গ্রিনিং এক খোলা চিঠিতে জানান, তরুণ প্রজন্ম তাদের চারপাশের দুনিয়া থেকে বিভ্রান্তিকর ও নারীবিদ্বেষি মন্তব্যে রীতিমতো বিধ্বস্ত। টিনেজ মেয়েদের যৌনতায় বাধ্য করা হচ্ছে। এ কারণে আমাদের যৌন ও সম্পর্ক বিষয়ে শিক্ষা প্রদান বাধ্যতামূলক করা উচিত। স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক স্থাপনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা এক ধরনের কেলেঙ্কারী।

বিবিসি’র ‘ফ্রিডম অব ইনফরমেশন’ অনুরোধে সরকার জানায় যে, বিগত ৩ বছরে স্কুলে ৬০০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া যৌন হয়রানির ঘটনার অভিযোগ রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার।

#SREnow হ্যাশট্যাগে প্রতি ৫ জনের একজন টিনেজ ছেলে জানান, মেয়েদের প্রতারণার কারণে যৌন হয়রানি করা একটা ছেলের পক্ষে অতি স্বাভাবিক ঘটনা।

এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, মেয়েরা যৌন নিপীড়নকে অতি সাধারণভাবে নিয়েছেন এবং এ কারণেই ছেলেরা এ কাজে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।

বর্তমানে ব্রিটিশ নিয়মে প্রাইমারী স্তরে যৌনবিজ্ঞান বিষয়ে কিছু মৌলিক শিক্ষা প্রদানের নিয়ম জাতীয় কারিকুলামে রয়েছে। কিন্তু স্কুলগুলোর এই নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক নয়।

বেটস বলেন, শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির শিকার হলে তার দায় স্কুলগুলোকে নিতে হবে। কারণ বাবা-মা সব সময় এসব বিষয় নিয়ে সন্তানদের সঙ্গে কথা বলেন না। দুঃখজনকভাবে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলের বাইরেও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকেন। অনেক ছেলে-মেয়ে বুঝে ওঠে না কোনটা যৌন হয়রানি। তাদের কাছে হয়তো এটাই স্বাভাবিক বিষয় বলে গণ্য হয়।

এ বছরের প্রথম দিকে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলে এত কম বয়সী শিক্ষার্থীদের যৌনশিক্ষা প্রদান বেমানান।

এইচআইভি এবং যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন একটি চ্যারিটি টেরান্স হিগিন্স ট্রাস্ট এক জরিপে জানায়, তিন-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে যৌনতা বিষয়ে কোনো ধারণা নেই।

ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের এক মুখপাত্র জানান, আমরা আশা করি স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে উন্নতমানের শিক্ষা দেবে। শিক্ষকরা যেন শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহজে শিক্ষা প্রদান করতে পারেন সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025808811187744