দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে লাঞ্ছিত ও হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা।
বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হাওলাদারের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের ইঙ্গিতে এই ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষকদের।
এদিকে এর প্রতিবাদে ওই শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার থেকে সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ বলছেন, ওই শিক্ষকরাই উল্টো তাকে অবরুদ্ধ করে রেখে সরকারীরি কাজে বাধা ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সাথে ধাক্কা-ধাক্কি ও অসদাচারণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ফাতিহা ফারহানা, কৃষ্ণ চন্দ্র রায়, হাফিজ আল হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, গত ১১ অক্টোবর রিজেন্ট বোর্ডের সভায় তাদের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু পদোন্নতি দেয়া হলেও পদ অনুযায়ী বর্ধিত বেতন দেয়া হচ্ছিল না বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতি পাওয়া ৬১ জন শিক্ষককে।
তারা জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ও কারণ জানতে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হাওলাদারের কক্ষে প্রবেশ করেন ৬১ জন শিক্ষক। কথা চলাকালীন সময় জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা তাদের ধাক্কা দিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন। এরপর কিছু ছাত্র শিক্ষকদের ইঙ্গিতে তাদের লাঞ্ছিত করেন ও মারধর করেন।
এরপর এই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা ও বর্ধিত বেতন না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার থেকে সকল প্রকার ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করার ঘোষণা দেন।
হাবিপ্রবি’র কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হাওলাদার জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বেতন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষকরা বুধবার তার কাছে এসে অযৌক্তিকভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। এসময় তারা সরকারি কাজে বাধা দেন এবং তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
তিনি জানান, খবর পেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা আসলে তারা তাদের সঙ্গে অসদাচারণ ও ধাক্কা-ধাক্কি করেন। এক পর্যায়ে সিনিয়র শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্ররা তাকে এসে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদেরওপর কে হামলা করেছে, তা তার জানা নেই। ছাত্ররা কিভাবে সেখানে এসেছে, তাও তার জানা নেই।
উল্লেখ্য, ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দুই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিসহ ৬ দফা দাবিতে গত ৪ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন ঘন্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম।