বাংলাদেশ রেলওয়ে আওতাধীন সৈয়দপুর, পাকশী ও খুলনায় তিনটি রেলওয়ে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের কাজ স্থবির হয়ে আছে। দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। একজন প্রকৌশলীকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছিল।
জানা গেছে, ওই পরিপত্রে রেলওয়ে পরিচালিত তিনটি রেলওয়ে হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজে উন্নীত করতে গঠিত কমিটিকে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু কমিটি গঠনের ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও গঠিত প্রকল্প কমিটির একটি সভাও হয়নি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় সারা দেশে রেলওয়ের অব্যবহৃত জমি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারে বিভিন্ন প্রকল্প গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। লোকসানে থাকা রেলওয়ের অব্যবহৃত জমিতে হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, তারকা হোটেল ও শপিংমল প্রতিষ্ঠার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। রেলওয়ের উন্নয়ন কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত এসব প্রকল্প পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় বাস্তবায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রকল্প গ্রহণের স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, খুলনা, পাকশী ও সৈয়দপুরকে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক দপ্তরের উপপরিচালক (প্রকৌশলী) মো. সেলিম রউফ স্বাক্ষরিত পরিপত্রে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কমিটি প্রধান করা হয় রেল ভবনের পরিচালককে (প্রকৌশল)। কমিটির সদস্য করা হয় বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈয়দপুর, বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা পাকশী ও বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা পাকশীকে।
সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নেতা মোখছেদুল মোমিন জানান, রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবি আমলে নিয়ে রেলওয়ে মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা প্রকল্প সরকার অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি তেমন হয়নি। তবে সরকারের মহতি ঐ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প কমিটির কোনো অবহেলা থাকতে পারে।
প্রকল্প কমিটি সদস্য ও সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালের বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম আরা কমিটির সভা না হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তাকে চিঠি দিয়ে প্রকল্প কমিটির সদস্য করার বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু ১৬ মাসেও কমিটির একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়নি। তিনি বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে আছেন। প্রকল্প কমিটির অপর সদস্য ও পাকশী বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নূরুজ্জামান জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাকে প্রকল্প কমিটির সদস্য করা হয়েছে, এমন কোনো চিঠিও এ যাবৎ তিনি পাননি।
প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে রাজশাহীস্থ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. ইমতিয়াজ জানান, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বদল হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি স্থবির হয়ে আছে। তবে মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলে প্রকল্প কমিটির কাজ দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে।