মাত্র ২৩ বছরেই পরিত্যক্ত ভুতুড়ে ভবনে পরিণত হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ছোটবালিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন। খসে পড়েছে দরজা,জানালা। পিলার ভেঙ্গে বের হয়ে গেছে রড। একটু বাতাস কিংবা হাঁটার কম্পনে ঝুরঝুর করে পড়ছে ছাদের ও দেয়ালের পলেস্তারা।
এই ঝুঁকিপূর্ন ভবনের একটি কক্ষে এখনও শিক্ষকদের বসার কক্ষ ও লাইব্রেরি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ক্লাস হচ্ছে পাশ্ববর্তী একটি টিনসেড
ঘরে। প্রায়ই স্কুল শুরুর আগে ও ছুটির পর শিশুরা এই ভবনের মধ্যে ও সামনের মাঠে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। প্রায় দুই বছর আগে এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হলেও এখনও ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত এই বিদ্যালয় ভবন দেখলে মনে হবে কোন পরিত্যক্ত দূর্গ। একটিও দরজা,জানালা অক্ষত নেই। ভবনের
বাইরের অংশ দেখলে মনে হয় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পলেস্তরা উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। ছাদ, দেয়াল ও পিলারের পলেস্তরা খসে পড়ে রড ও ইট বের হয়ে গেছে। গোটা ভবনটি স্যাঁতসেতে ও ভঙ্গুর। একটু বাতাস হলেই উড়ছে বালি। কখনও কখনও বড়বড় খন্ডের পলেস্তরাও পড়ছে।
ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় গত বছর থেকে বিদ্যালয়ের পাশে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনসেড ঘর তুলে সেখানেই চলছে বিদ্যালয়ের ক্লাস।
১৯৮৭ খিষ্ট্রাব্দে প্রতিষ্ঠিত ছোট বালিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয় ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে। বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ছয় বছর পর এই
ভবন নির্মাণ হলেও মাত্র ২৩ বছরেই সেটি এখন পরিত্যক্ত। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী ও তিন জন শিক্ষক রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে।
একাধিক অভিভাবক জানান, প্রায়ই বিকালে স্কুল মাঠে সন্তানরা খেলতে গিয়ে ওই পরিত্যক্ত স্কুল ভবনের ভেতর ঢুকলে তাদের গায়ে পলেস্তারা পড়ে কিংবা ভাঙ্গা পিলারের মধ্যের বের হয়ে থাকা রডের খোঁচায় আহত হচ্ছে। এছাড়া স্কুলটাইমেও ওই ভবনে প্রায়ই শিক্ষার্থীরা ঢুকছে। এতে ভয়াবহ দূর্ঘটনার আশংকা করছেন তারা। ভবনটি দেখলে এখন ভুতুড়ে মনে হয়। ওখানে ক্লাসও হয় না। তাই দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবন করা হোক।
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বৃষ্টি হলে ওই ভবনের মধ্যেই তারা খেলাধুলা করে। মাঝে মধ্যে ছাদ থেকে পলেস্তরা পড়ে তাদের গায়ে। চোখে ধুলা,বালি যায়। বৃষ্টি, বাতাস হলেই একটু পরপর ছাদ থেকে পলেস্তারা ও পানি পড়ে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন,বিদ্যালয় ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় পাশের টিনসেড ঘরে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম মোস্তফা জানান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, নতুন স্কুল ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এই পরিত্যক্ত ভবনটি যাতে নিলামে ভেঙ্গে বিক্রি করা হয় এজন্য শিক্ষা কমিটির সভায় একাধিবার বলা হয়েছে। হয়তো খুব শীঘ্রই নতুন ভবন বরাদ্দ পাওয়া যাবে।