২৮ বছর ধরে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়নি রাজশাহী কলেজে। ফলে অনেকটাই চুপসে গেছে ছাত্র সংগঠনগুলো। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি নির্বাচনের ঘোষণা আসলেই চাঙ্গা হবে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। আর কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান বলছেন, চলতি বছরেই কলেজটির ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পরে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষ ক্ষমতাবলে ছাত্রসংসদের সভাপতি, শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন ভিপি (সহসভাপতি), জিএস (সাধারণ সম্পাদক) ও অন্যান্য পদের জন্য সদস্য নির্বাচিত হবেন। এক বছর মেয়াদী ছাত্রসংসদ নির্বাচন প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হবার কথা। তবে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের পর দীর্ঘ ২৮ বছর রাজশাহী কলেজে আর ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়নি। স্বাধীনতার পর রাজশাহী কলেজ ছাত্রসংসদের প্রথম ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন নাটোরের সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস। আর সবশেষ ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে আবদুল হাদী রনি ভিপি ও মোহাম্মদ মাহাবুব জিএস নির্বাচিত হন।
রাজশাহী কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন সময়ের দাবি উল্লেখ করে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ঐতিহ্যবাহী ও দেশসেরা এ কলেজে দীর্ঘদিন ছাত্রসংসদ নির্বাচন নেই। আমরা চাই, দ্রুত শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার ফিরে পাক।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান নূর দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ বলেছিল ডাকসুর (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন) দিকে তাকিয়ে আছে। সেই নির্বাচনও হয়ে গেছে। যেহেতু প্রশাসন নির্বাচন নিয়ে ভাবছে, তাই সেদিকে এখনই নজর দেয়া জরুরি। এজন্য অতি দ্রুত ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে বসে আলোচনা করে সহাবস্থান নিশ্চিত করে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।’
রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘অনেক সময় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে ছাত্রদের দাবিগুলো নিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। এজন্য ছাত্রসংসদ প্রতিনিধি প্রয়োজন, যারা ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে। আমরা সব ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে নির্বাচন চাই।’
সিয়াম আরও জানান, এর আগে ছাত্রসংসদ নির্বাচনসহ টিএসসি নির্মাণের দাবিতে ২১ দফা দাবি নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এইচএসসি অ্যালামনাই অনুষ্ঠানের পর পৃথক পৃথক ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসব। সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
অধ্যক্ষ আরও জানান, এই খাতের প্রায় ৬৭ লাখ টাকা অব্যয়িত অবস্থায় আছে। আমরা চাই এমন ছাত্রসংসদ আসুক, যারা কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে আমাদেরকে তাড়িত করবে। তবে আমরা এমন কোনো নির্বাচন চাই না, যেটা এককেন্দ্রিক ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কলেজের সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হবে।