আজ ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস। গোটা বিশ্বের শিক্ষকরা আজ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিনটি পালন করবেন। কিন্তু এই দিবস নিয়ে কোনো অনুভূতি কিংবা ভাবনা নেই গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার শিক্ষকদের মাঝে। বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করার দাবিতে এবং আর্থিক সমস্যায় মানবেতর জীবন যাপনকারী নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে 'প্রতিবাদ' স্বরূপ সাদুল্যাপুরের শিক্ষকরা 'বিশ্ব শিক্ষক দিবস' নিয়ে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেননি।
উপজেলার ধাপেরহাট সফিরন নেছা আব্দুল শেখ বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান জানান, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন অথচ এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কয়েক বছর ধরে অত্যন্ত সন্তোষজনক ফলাফল করছেন। চলতি বছর এইচএসসি বিএম পরীক্ষার ফলাফলে কলেজটি রংপুর বিভাগে তৃতীয় স্থানে আছে। পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় এনে এই কলেজের শিক্ষকদের সরকারিভাবে বেতন-ভাতার আওতায় আনা উচিত।
উপজেলার হিঙ্গারপাড়া বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম সরকার জানান, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখার শিক্ষকরা দীর্ঘদিনেও বেতন-ভাতা না পাওয়ায় অত্যন্ত হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সব শর্ত পূরণ থাকার পরও কলেজ শাখা এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়নি। এ অবস্থায় কারোরই মাথায় শিক্ষক দিবসের ভাবনা নেই।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবদুর রউফ মণ্ডল বলেন, শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। অথচ সেই শিক্ষকরা না খেয়ে জীবন যাপন করছেন। সেদিকে যেন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই। এখানকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাই তাদের কথা ভেবে বিশ্ব শিক্ষক দিবস নিয়ে কোনো কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল হাসান জানান, এ উপজেলায় তিনটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখা, তিনটি কারিগরি কলেজসহ তেরোটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ছয়টি দাখিল মাদ্রাসা এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়নি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ৩২০ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। তারা বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অভাব অনটনে জীবন যাপন করছেন।