৪ শিক্ষকে চলছে কলেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ফেনীর পরশুরাম সরকারি ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক সংকটে এগারোটি বিষয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। চার জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। পাঠদান বন্ধ থাকা বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলা, ইংরেজি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন, ব্যবস্থাপনা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা ও গণিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলেজটিতে অধ্যক্ষসহ সহকারী অধ্যাপকের পদও শূন্য রয়েছে। এছাড়াও কলেজটিতে গ্রন্থাগারিক, সহকারী গ্রন্থাগারিক, প্রদর্শক, কম্পিউটার অপারেটর এবং ল্যাবরেটরি সহায়ক নেই। কলেজটিতে ইতিহাস ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে একজন করে দুই জন প্রভাষক এবং বাংলা ও ইতিহাস বিভাগে একজন করে মোট দুই জন সহকারী অধ্যাপক কর্মরত আছেন।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু কায়সার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কলেজে শিক্ষকের পদ আছে ২০টি। এর মধ্যে ১৬টি পদ শূন্য। বর্তমানে কলেজে মাত্র চার জন শিক্ষক দিয়ে কাজ চলছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কলেজের পাশের সড়ক ও বিভিন্ন স্থাপনায় বসে আড্ডা দিয়ে অলস সময় পার করছেন। কারণ জানতে চাইলে কয়েকজন ছাত্রী বলেন, শিক্ষক নেই, ক্লাস বন্ধ। তাই বসে গল্প-গুজব করে সময় পার করছি।

মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সাহেদ আহমেদ বলেন, বাংলা, ইংরেজি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শনের শিক্ষক না থাকায় ভর্তির পর থেকে কোনও ক্লাস হয়নি। উপজেলার একমাত্র সরকারি কলেজে মানবিক বিভাগে কোনও শিক্ষক নেই, এরপরও দুইশ’ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে কেন এমন হলো, ভাবলে অবাক লাগে।

একই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইছমাইল, সোহরাব হোসেন, আমজাদ হোসেন জানান, ক্লাস না হলেও অভিভাবকদের চাপে কলেজে আসতে হয়। আসার পর সহপাঠীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সময় কাটে।

বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রকিব উদ্দিন বলেন, ভালো ফলাফলের আশায় গ্রাম থেকে এসে কলেজে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে ক্লাস করতে পারছি না। কারণ, শিক্ষক নেই। এতে পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

একই বিভাগের ছাত্রী সাহেদা খানম বলেন, শিক্ষক সংকট দূর না হলে উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের ১৫০ জন ছাত্রীর ফল খারাপ হবে।

একই অবস্থা বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষক সংকটে তাদেরও পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান শিক্ষার্থী আবু সায়েম, দিলদার হোসেনসহ কয়েজন শিক্ষার্থী।

কয়েকজন অভিভাবক জানান, শিক্ষকদের আবাসন সমস্যার কারণেও অনেক শিক্ষক বদলি হয়ে চলে যান।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু কায়সার মো. হারেছ বলেন, মাত্র চার জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদানের কাজ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিক্ষক শূন্যতার বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দফতরে বারবার অবহিত করেছি, তবে কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেই।

শিক্ষক সংকট ছাড়াও কলেজে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, যার সমাধান না হলে পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টি হবে না বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0096850395202637