এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেয়ার ঘোষণার ২ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও হিসেবে তালগোল পাকাচ্ছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলের সংশ্লিষ্টরা। গত ৮ নভেম্বর ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করেছে। কিন্তু এজন্য কত টাকা দরকার হবে এবং জুলাই থেকে যারা অবসরে গেছেন তাদেরকে আলাদা করে অবসর ও কল্যাণের জন্য মোট ৬ শতাংশ টাকা কিভাবে কেটে রাখা হবে অদ্যাবধি তার হিসেবে মেলাতে পারছেন না ইএমআইএস সেলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এছাড়া যাদের চাকরিতে যোগদানের বছরপূর্তি হয়নি তাদেরকে এমপিও সফটওয়্যার থেকে কীভাবে আলাদা করবেন তা্ও ঠিক হয়নি। সফটওয়্যারে নতুন কয়েকটি প্রোগ্রাম সেট করার প্রয়োজনীয়তা বুঝতেই কেটে গেছে সাত দিন। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা হিসেব মেলাতে পারেননি।অথচ ইএমআইএস সেল থেকে সফটওয়্যার ব্যবহার করে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওর যাবতীয় কাজ এবং বেতন ছাড়ের হিসেব-নিকেশ রাখা হয়।
কারা পাবেন ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি?
দৈনিক শিক্ষার প্রশ্নের জবাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি একবছর পূর্ণ না হলে প্রবৃদ্ধি পাবেন না। তিনি যুক্তি দেন যে, সরকারি শিক্ষকদের ন্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পাঁচ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সুতরাং ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন যাদের চাকরির এক বছর পূর্ণ হয়েছে তারাই প্রবৃদ্ধি পাবেন এবং তাদেরটা একই বছরের ১ জুলাই থেকে প্রবৃদ্ধি কার্যকার হবে। এবং শুধু তারাই বকেয়াসহ পাবেন। যাদের এক বছর পূর্ণ হয়নি তাদেরকে আগামী অর্থবছর পযন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু ইএমআইএস সেলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই থেকে সবার জন্য হিসেব কষে তথ্য-উপাত্ত হাজির করেন মহাপরিচালক ও পরিচালকদের কাছে। গত সোমবার ওই হিসেব বাতিল করে নতুন হিসেব কষতে বলা হলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা করতে পারেননি বলে দৈনিক শিক্ষাকে নিশ্চিত করেছেন একাধিক কর্মকর্তা। এদিকে গত ১৯ নভেম্বর এমপিও কমিটির সভায় নভেম্বর মাসের বেতনের সঙ্গেই ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যদিও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা আরো একমাস পেছানোর পক্ষে যুক্তি দেন। তাদের দাবি হিসেবটা জটিল তাই সময় নিয়ে করা উচিত।
অপর একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, যারা ২০১৮ খিস্টাব্দের ১ জুলাই থেকে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হবেন তারা ইনক্রিমেন্ট পাবেন ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই থেকে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি স্পষ্টিকরণ আদেশ দিলে বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হবে বলে মত দেন তিনি।
এদিকে চলতি নভেম্বর মাসের এমপিও সাথেই বার্ষিক প্রবৃদ্ধির টাকা বকেয়াসহ দেয়ার জন্য মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুককে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দৈনিক শিক্ষার সম্পাদক ও শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইরাবের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খান।
সারাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নভেম্বর মাসের বেতনের সঙ্গে বকেয়াসহ প্রবৃদ্ধির টাকা পাবেন।