৫৩ বছর পেরিয়ে ৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এ উপলক্ষে সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপাচার্যের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, সত্য-সুন্দর-কল্যাণ আর জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হওয়ার তীর্থস্থান হলো বিশ্ববিদ্যালয়। সৎ, যোগ্য ও বহুমাত্রিক দক্ষতা সম্পন্ন আলোকিত মানব সম্পদ উৎপাদনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম লক্ষ্য।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়কে উন্নত বিশে^র কাতারে শামিল করতে এই প্রতিষ্ঠানের জ্ঞান-গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার অধিকতর মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিশ^বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে আমরা দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা তাদের মেধাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে বিশ^বিদ্যালয় হতে অবিরাম জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে সত্য-সুন্দর-কল্যাণকে ধারণ করে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে, এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন চবি উপাচার্য।
জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সূচিত অনুষ্ঠানে আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হয়। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সদস্যবর্গ, জাতীয় চারনেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া সাম্প্রতিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দভাগ রেল দুর্ঘটনায় ও চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত এবং শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ৫৩তম ‘চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষে বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সকলকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন। বিশেষ এই দিনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে যোগ দেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রা শেষে চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ১৭ নবেম্বর সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মৃতি স্তম্ভ, শহীদ মিনার, জয়বাংলা ভাস্কর্য, জিরো পয়েন্ট ‘স্মরণথ চত্বর’ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহ দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চবি সিনেট সদস্য প্রফেসর ড. সুলতান আহমদ, সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মহীবুল আজিজ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মোঃ জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ সেকান্দর চৌধুরী, শহীদ আবদুর রব হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. এ কে এম মাঈনুল হক মিয়াজী, অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আলী আশরাফ, প্রক্টর প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ-চবি’র সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ রাশেদ-উন-নবী, চবি অফিসার সমিতির সভাপতি এ কে এম মাহফুজুল হক, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আবদুল হাই। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহামদ। অনুষ্ঠানে বিশ^বিদ্যালয়ের অনুষদসমূহের ডিন, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্ট, বিভিন্ন বিভাগীয় সভাপতি এবং ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।