৬ মাসের ডিপ্লোমায় মাদরাসায় সুপারিশপ্রাপ্তদের তথ্য চেয়েছে মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রথম নিয়োগ চক্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দিয়ে নিয়মিত পাঠদান করছেন অনেক শিক্ষক। কিন্তু তারা এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। প্রথম নিয়োগ চক্রে এনটিআরসিএর সুপারিশকৃত ৩৪৪ জন শিক্ষক বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসায় যোগদান করেছ্বন এদের মধ্যে মাদরাসায় সুপারিশপ্রাপ্তদের তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও এনটিআরসিএর কাছে এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। সোমবার (২৩ মার্চ) কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রথম নিয়োগ চক্রে বিভিন্ন মাদরাসায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে এনটিআরসিএর সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের নাম, যোগদানের তারিখ ও যোগদানের করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও এনটিআরসিএর চেয়ারম্যানকে। সোমবার (২৩ মার্চ) এসব শিক্ষকদের তথ্য চেয়ে চিঠি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এবং এনটিআরসিএতে পাঠানো হয়েছে।

এনটিআরসিএ সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রথম নিয়োগ চক্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ৬ মাসের ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ সনদ নিয়ে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৭ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে ৩৪৪ জন শিক্ষক বিভিন্ন বেসিক স্কুল ও মাদরাসায় যোগ দিয়ে নিয়মিত পাঠদান করছেন। আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে তাদের নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছিল।

জানা গেছে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দিয়ে নিয়মিত পাঠদান করা ৩৪৪ জন শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জটিলতা নিরসনে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ এপ্রিল অধিদপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছিল বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। 

জানা যায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এনটিআরসিএ প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদন করেছিলেন অনেক প্রার্থী। কিন্তু আইনি জটিলতায় আটকে যায় তাদের নিয়োগ সুপারিশ। জটিলতা নিরসন হলে গত ডিসেম্বরে ১ হাজার ৯৫ জনকে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৭ জনকে সুপারিশপত্র দেয়া হয়। তবে তাদের মধ্য থেকে ৩৪৪ জন প্রার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন বলে জানা গেছে। তারা ৬ মাসের ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়ে কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেছেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে ৬ মাসের ডিপ্লোমায় কম্পিউটার শিক্ষক পদে যোগদানের সুযোগ ছিল। কিন্তু ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জারি করা হয় নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো। নতুন সেই এমপিও নীতিমালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি অথবা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড হতে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-কম্পিউটার সায়েন্স বা সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। ৬ মাসের ডিপ্লোমায় যোগদান করায় এসব শিক্ষকের এমপিও আবেদন আঞ্চলিক উপপরিচালকরা ইএমআইএস সেলে অগ্রায়ন করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ জটিলতা নিরসনে অধিদপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছিল এনটিআরসিএ।  

এনটিীআরসিএ সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও মামলার কারণে নিয়োগ সুপারিশ কার্যক্রম যথাসময়ে সম্পন্ন করা হয়নি। মামলা সম্পন্ন হয়ে গেলে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে রায়ের আলোকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো নির্দেশিকা মোতাবেক ফল চূড়ান্ত করা হয়। মামলার রায় অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি বা সমমান এবং সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার বিষয়ে ন্যূনতম ৬ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণযোগ্য হয়। সে প্রেক্ষিতে কম্পিউটার বিষয়ে ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণধারীরাও নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এ মামলার রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা কেবলমাত্র ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের প্রার্থীদের বেলায় প্রযোজ্য হবে, তার পরবর্তীদের বেলায় নয়। 

এদিকে অধিদপ্তরে পাঠানো চিঠিগুলোতে, মামলার রায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রেক্ষিতে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের বেলায় ৬ মাসের প্রশিক্ষণের পূর্বের নীতি অনুসরণ করার জন্য অর্থাৎ মামলার রায়ের মতে কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছিল এনটিআরসিএ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036699771881104