শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির নতুন নীতিমালা বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম অনুসারে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বিভিন্ন সুবিধা এবং বিদ্যমান বেতনভাতা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবিতে আজ সোমবার ২৪ সেপ্টেম্বর) থেকে সব ধরনের একাডেমিক ও ননএকাডেমিক কর্মকাণ্ডে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এর আগে রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক এ এম এম শফিউল্লাহ এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সচিবালয় কক্ষে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন তারা ।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। সেখানে এমন সব কঠিন শর্তারোপ করা হয়েছে, যা ইউজিসি ও অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এমনকি তাদের কর্মঘণ্টাও অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ সে অনুযায়ী বেতন বাড়েনি; বরং কারও কারও ক্ষেত্রে বেতন-ভাতার হার কমে গেছে। এ জন্য ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ দফা দাবি জানিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা। গতকাল বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভায় নতুন নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে শিক্ষকদের দাবির কোনো প্রতিফলন ঘটেনি বলে তারা মনে করেন। এ জন্য তারা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
একজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, আগের নিয়মে মাস্টার ডিগ্রি ও যে কোনো জার্নালে একটি গবেষণা নিবন্ধ থাকলে দুই বছরের মধ্যে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়া যেত। নতুন নিয়মে মাস্টার ডিগ্রি থাকলেও ইনডেস্ক জার্নালে তিনটি নিবন্ধ থাকতে হবে। এমনকি পাঁচ বছরের মধ্যে শর্ত পূরণ না করতে পারলে চাকরিচ্যুত হবেন। একইভাবে অন্যান্য পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও কঠিন সব শর্তারোপ করা হয়েছে।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, সাধারণত যে কোনো নীতিমালা একাডেমিক কাউন্সিল থেকে পাস হয়ে সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়। অথচ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ তাদের ইচ্ছেমতো কমিটি দ্বারা প্রণীত নীতিমালা নিজেরাই অনুমোদন করে। এবারকার নিয়োগ বিধিমালাতেও কোনো স্থায়ী শিক্ষকদের রাখা হয়নি বলে তিনি জানান।
শিক্ষকদের দাবি কতটুকু পূরণ হয়েছে, এমন প্রশ্নে উপাচার্য অধ্যাপক এ এম এম শফিউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, অনুমোদিত নিয়োগ বিধিমালা প্রকাশের আগে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। দু’তিন দিনের মধ্যে এটি প্রকাশ হতে পারে।