৯০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক ১ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে মাত্রাতিরিক্ত শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অ্যানাটমি বিভাগে ৯০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক আছেন মাত্র একজন।

ফিজিওলজিতে ৭০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক আছেন দুইজন। বায়োকেমিস্ট্রিতে একই পরিমাণ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ৪ জন ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে ২৮০ জনের বিপরীতে শিক্ষক আছেন মাত্র একজন। অথচ নিয়মনুযায়ী ২০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক থাকার কথা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষক সংকটের কারণে যথাযথ পাঠদান ছাড়াই তাদের পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। ফলে অ্যাকাডেমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত থেকে পাস করে বের হওয়া ডাক্তারদের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

তবে চমেক কর্তৃপক্ষের দাবি, এ চারটি বিভাগে তীব্র শিক্ষক সংকটের মধ্যেও বাইর থেকে অতিথি শিক্ষক এনে পাঠদান করা হচ্ছে। ফলে কিছুটা হলেও সংকট কেটেছে। 

জানা গেছে, চমেকে ৩৫টি বিভাগের মধ্যে অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে তীব্র শিক্ষক সংকট রয়েছে। কলেজের এক বিভাগের শিক্ষক দিয়ে অন্য বিভাগের পাঠদান করা হচ্ছে।

অ্যানাটমি বিভাগে কিউরেটর ডা. মো. গোলাম ফারুক ও লেকচারার ডা. ইফাত জরিন ইপসি থাকলেও পাঠদান করেন অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুজ্জামান। বাকি দু’জন ব্যবহারিক বিষয়গুলো দেখেন। ফিজিওলজি বিভাগে পাঠদান করেন অধ্যাপক ডা. মমতাজ বেগম ও সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহিন আকতার। একজন লেকচারার ডা. প্রাগোয়া পারমিতা চক্রবর্তী থাকলেও পাঠদান করেন না, তিনি ব্যবহারিক বিষয়গুলো দেখেন।

বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে পাঠদান করেন দু’জন অধ্যাপক ও দু’জন সহযোগী অধ্যাপক। তারা হলেন অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হক, অধ্যাপক ডা. রেহেনা আজিজ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলাম ও ডা. এসএম তৌহিদুল আলম। ব্যবহারিক বিষয়গুলো দেখার জন্য আছেন একজন লেকচারার ডা. আয়েশা পারভিন।

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠদান করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুমন মু‍ৎসুদ্দি। ব্যবহারিক বিষয়গুলো দেখেন লেকচারার ডা. রাজু প্রসাদ দে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একজন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের ভালো শিক্ষা অর্জন করা প্রয়োজন। কারণ ভালো শিক্ষা না পেলে পরবর্তী জীবনে যেমন চরম প্রভাব ফেলবে, তেমনি ব্যবহারিক জীবনেও সফল হওয়া কঠিন। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।

ওই চারটি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক জানান, সরকারের উচিত জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক সংকট দূর করা। ভালো শিক্ষা না পেলে ভালো একজন শিক্ষক যেমন হতে পারবে না, তেমনি ভালো ডাক্তার হওয়াও কঠিন হয়ে যাবে।

শিক্ষক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে চমেক অধ্যক্ষ ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠদান করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুমন মু‍ৎসুদ্দি। তিনি ২৮০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদানও করেন আবার ফরেনসিকে পোস্টমর্টেমের কাজও করেন। এর বাইরে তাকে আবার কোর্টেও যেতে হয়।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে বাইর থেকে অতিথি শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার অবগত আছেন। খুব শিগগরই এ সংকট কেটে উঠবে বলে আমরা আশা করছি।

চমেকে এক বছর মেয়াদি হাতে-কলমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা (ইন্টার্নশিপ) দেওয়া হয়। স্নাতক পর্যায়ে রয়েছে ৫ বছর মেয়াদি এমবিবিএস শিক্ষাকার্যক্রম। এছাড়া স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এমডি ও এমএস শিক্ষাকার্যক্রম চালু রয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034730434417725