‘খ্যাপ শিক্ষক’ নয়, নিজস্ব শিক্ষক তৈরি করুন : ইউজিসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

‘খ্যাপ’ শিক্ষকের ওপর নির্ভর না হয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব শিক্ষক তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল্লাহ। শিক্ষকদের একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়াকে ‘খ্যাপের’ সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, শিক্ষকরা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘খ্যাপ মারায়’ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মানে প্রভাব ফেলেছে। 

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) আয়োজিত উচ্চশিক্ষার মান অর্জন বিষয়ে দু’দিনব্যাপী প্রথম সিইটিএল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইউল্যাবের প্রধান ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিভিন্ন কোর্সের জন্য ‘অ্যাডজাঙ্ক ফ্যাকাল্টি’ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। কিন্তু তারা নিজেদের কর্মীদের উন্নয়ন করছে না। অ্যাডজাঙ্ক ফ্যাকাল্টিকে আমরা স্থানীয় ভাষায় বলি খ্যাপের টিচার। খ্যাপ খেলতে যান যারা। তারা এক ক্যাম্পাস থেকে আরেক ক্যাম্পাসে যাওয়ার ওপরেই থাকেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম খুঁজলে অনেককেই পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেই শিক্ষক দুই-তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। তারপর সন্ধায় কোনও একটি টেলিভিশন চ্যানেলে যা করার করছেন। এগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার ওপরে একটি প্রভাব ফেলেছে। এখানে অনেকেই আছেন, জিজ্ঞেস করেন তারা আমার সঙ্গে সহমত জ্ঞাপন করবে বলে আমি মনে করি। ‘আমি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আহ্বান জানানি, এসব খ্যাপ শিক্ষকের ওপর নির্ভর না হয়ে, আপনারা নিজস্ব শিক্ষক তৈরি করুন।’

ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় সবচেয়ে প্রধান সমস্যা হলো মান। এ সমস্যা পাবলিক এবং প্রাইভেট দু’জায়গাতেই আছে। উচ্চশিক্ষায় আমাদের পরিমাণগত কোনও সমস্যা নেই। যদি আমাদের সেই সমস্যা থাকতো, তাহলে আমাদের এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় থাকতো না। বিগত ১০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এ কারণে ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় চলমান থাকার পরেও আরও ১০০টির মতো আবেদন জমা পড়ে আছে। আমাদের সময় উচ্চশিক্ষায় পরিমাণগত সমস্যা ছিল। কারণ, তখন এত বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর ইচ্ছা থাকলেও পাঠানো যেতো না। কারণ, যথেষ্ট স্কুল ছিল না। আজকের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন সবজায়গায় স্কুল, হাই স্কুল, কলেজ আছেভ এমনকি বসবাসের স্থান থেকে হাটা দূরত্বেই স্নাতক সুবিধা সম্বলিত কলেজ আছে। তাই শিক্ষার অধিকার এখন সব জায়গাতেই আছে। কিন্তু মূল সমস্যা হলো মানসম্পন্ন শিক্ষা।’

‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বাণিজ্য করে’ এমন ধারণা ভুল উল্লেখ করে কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘কিছু বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো করতে পারে, কিন্তু ঢালাওভাবে সবাই তো করে না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভিনসেন্ট চ্যাং। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032401084899902