দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কাছে ‘ডিজিটাল জিম্মি’ হয়ে আছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা মহিলা কলেজ। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের একাদশে ভর্তিতে প্রথম দফার আবেদনের সময় ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে কলেজটি কোনো আসন শূন্য না দেখানোয় এ কলেজে আবেদন করতে পারেনি কেউ। সমস্যা সমাধানে বার বার চেষ্টা করলেও দিনাজপুর বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে বিষয়টি সুরাহা হয়নি বলে দাবি করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ। ২য় দফার আবেদনে এ সমস্যার প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
নলডাঙ্গা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহীন আশরাফ দৈনিক শিক্ষাকে জানান, একাদশে ভর্তির প্রথম দফার আবেদন শুরু হয়েছে। কিন্তু আবেদন শুরুর প্রথম দিন থেকেই নির্ধারিত ওয়েবসাইটে কলেজের কোনো আসন ফাঁকা দেখানো হয়নি। তাই প্রথম ধাপে কেউ আবেদন করতে পারেনি কলেজটিতে। অধ্যক্ষ আরও দাবি করেন, বিষয়টি সমাধানে একাধিকবার ভর্তি সংক্রান্ত হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেছেন তিনি। কিন্তু হেল্পলাইন থেকে বলা হয় বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ আসলে তবেই ওয়েবসাইটটি আপডেট করা হবে।
অধ্যক্ষ দৈনিক শিক্ষাকে আরও জানান, এ বিষয়ে বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু বিষয়টি আমলে নেননি দিনাজপুর বোর্ডের কর্মকর্তারা। কলেজ পরিদর্শক ফারাজ উদ্দিন তালুকদারকে বিষয়টি জানালে সমস্যা সমাধান করে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ১৯ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় ভর্তির আবেদন শুরু হতে যাচ্ছে। বিষয়টি সমাধান না করলে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে কোনো শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে পারবে না।
এদিকে গত ১৬ জুন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে করা লিখিত আবেদনে অধ্যক্ষ বিষয়টি জানিয়েছেন। একইসাথে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে নলডাঙ্গা মহিলা কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তি আবেদনের সুযোগ দেয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ফারাজ উদ্দিন তালুকদার দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, কলেজটির কমিটি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। কলেজটির কোনো কমিটি নেই। অধ্যক্ষ শাহীন আশরাফ নিজেই কলেজ পরিচালনা করছেন। এ বিষয়ে একাধিকবার বোর্ডে তাকে ডাকা হলেও সে কোনো সাড়া দেয়নি। কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সুনীল কুমার অভিযোগ জানিয়ে কলেজের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছিল কি-না বা লিখিতভাবে অধ্যক্ষকে তলব করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে কলেজ পরিদর্শক জানান, লিখিতভাবে তলব করা হয়নি। তবে ফোন করে অধ্যক্ষকে ডাকা হয়েছে। কলেজ পরিদর্শক জানান, শাহীন আশরাফ বৈধ অধ্যক্ষ নন। তিনি নলডাঙ্গা কলেজের একজন শিক্ষক। তাই, নলডাঙ্গা মহিলা কলেজ সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে শোকজ করা হয়নি। নিয়োগ বাণিজ্য করতেই কলেজ খুলেছেন শাহীন। শাহীন আশরাফকে নলডাঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ শোকজ করেছিল এসব অভিযোগে।