‘মরণকামড়’ নীতিতে নামছে ৩৫ প্রত্যাশীরা

ঢাবি প্রতিনিধি |

প্রচার-প্রচারণা শেষ। চলছে শেষ মুহুর্তের লিফলেট বিলি। এরপরই কাঙ্ক্ষিত সেই লাগাতার সমাবেশ। চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে ফের মাঠে নামেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন আন্দোলকারীরা। সকাল ১০টায় এই কর্মসূচি লাগাতার চলবে।

বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদসহ সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনে অংশ নেবেন বলে জানা গেছেন। তারা বলছেন, এটাকে আমরা ‘ডু অর ডাই’ বা ‘মরণকামড়’ সমাবেশ হিসেবে দেখছি। প্রাথমিকভাবে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনে উপস্থিতির সংখ্যা ঠিক থাকলে বড় কর্মসূচি ঘোষিত হবে।

আন্দোলনের নেতা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, কাল সকাল ১০টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি। কর্মসূচির ব্যাপারে তারা আন্তরিক। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নামছি। আমাদের মধ্যে আগে যে আলাদা গ্রুপ ছিল, এখন আর আমাদের মধ্যে সে বিভাজন নেই। আন্দোলনে আমরা সবাই একাত্ম।

ইমতিয়াজ বলেন, সাত তারিখ থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে। মাঠ পর্যায়ে বড় অংশগ্রহণের ওপর আন্দোলন ও এর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে জানান তিনি।

এদিকে কালকের আন্দোলন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক এ এ আলী লিখেছেন, ‘৩৫ প্রত্যাশী বোনেরা আমাদের শক্তি, প্রেরণা। আপনারাও আমাদের সাথে ৩৫-এর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন তা ভোলার মত নয়। তাই আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার আন্দোলনে আপনাদের অংশগ্রহণ আমরা সকলেই আশা করি।’

নুরুল আলম নামে একজন বলছেন, ‘৩৫ দাবি নিয়ে আমি ঢাকায় আসছি, আপনি আসছেন তো? প্লিজ ঘরে বসে থাকবেন না রাজপথে আসুন আওয়াজ তুলুন ৩৫কে বাস্তবায়ন করার।’
 
আন্দোলনকারীরা বলছেন, দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই সমাবেশের প্রচার-প্রচারণায় চলেছে। সারাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাস এমনকি জেলা শহর ঘুরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। সবমিলিয়ে ৭ সেপ্টেম্বরের কর্মসূচি আশানুরূপ বা সফল হবে- সেটা বলাই যায়।

তথ্যমতে, ইতোমধ্যেই জেলাভিত্তিক মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ৩৫ আন্দোলনকারীরা। নিজেদের মধ্যে গড়ে গ্রুপগুলোর মধ্যেও  বৈঠক করেছেন দফায় দফায়। গ্রুপ নেতারা বলছেন, ৩৫ চাই দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে তাদের সমাবেশ গণজামায়েত রূপ নেবে। আশা করা যায়, সফলতা আসবে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার বয়স বেড়েছে। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি চাকরিতে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। আর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যে করা হয় ৬০ বছর। তাহলে চাকরি শুরু করার বয়স বাড়ানো হবে না কেন?

গত ২৫ এপ্রিল চাকরি প্রত্যাশীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে ওঠে। তবে তা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পড়াশোনা শেষ করার পর একজন ছাত্র অন্তত সাত বছর সময় পেয়েছে। এটা অনেক সময়। তা ছাড়া এর আগে চাকরির বয়স ২৫ বছর ছিল, সেখান থেকে ২৭ ও পরবর্তী সময়ে ৩০ বছর করা হয়। সে হিসেবে এখন বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই।

এ সময় তিনি প্রস্তাব উত্থাপনকারী সংসদ সদস্যকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান এবং প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। কিন্তু বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু সেটি প্রত্যাহারে রাজি না হলে কণ্ঠভোটের আয়োজন করা হয়। কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেন সংসদ সদস্যরা। মূলত প্রস্তাবটি পাস না হওয়াতেই তীব্র হতাশ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান আমলে চাকরি শুরুর বয়স ছিল ২৫ বছর। নতুন দেশে সরকারি চাকরি করার জন্যে দক্ষ লোক পাওয়া যাবে না বলে সেটা বাড়িয়ে ২৭ করা হয়েছিল। পরে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে সেটাও তো বাড়িয়ে ৩০ করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্যে বর্তমানে চাকরি শুরু করার বয়স ৩০ হলেও মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, উপজাতি কোটায় এই বয়স ৩২ আর নার্সের চাকরির জন্যে ৩৬।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031609535217285