পাঠ্যবইয়ে জাকির নায়েক, তদন্তের মুখে স্কুল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পিস টিভির প্রতিষ্ঠাতা জাকির নায়েককে পাঠ্যবইয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি ব্যক্তিত্ব’ বলে উল্লেখ করায় ভারতের আলীগড়ের একটি বিদ্যালয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উত্তর প্রদেশর শিক্ষা বোর্ড। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের নাগরিক জাকির নায়েককে বেশ আগেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযুক্ত করেছে দেশটি। পরে তাঁকে নাগরিকত্ব দিয়ে আশ্রয় দেয় সৌদি আরব। সেই জাকির নায়েককে এবার পাঠ্যবইয়ে তুলে আনায় তাঁকে নিয়ে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

আজ শনিবার (১৩ জানুয়ারি ) টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, আলীগড় স্কুলের প্রকাশিত এক বইয়ে জাকির নায়েককে একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। উত্তর প্রদেশ শিক্ষা দপ্তর ইতিমধ্যে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং আলীগড় স্কুলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে।

পাঠ্যবইটির নাম ‘ইলম-উন-নাফে’। আলীগড় স্কুল সরকার অনুমোদিত। এই স্কুলের পাঠ্যসূচি আলীগড়ের মাসুদ নগরের ইসলামি কার্যক্রমের আওতাভুক্তও নয়।

আলীগড়ের মৌলিক শিক্ষা অধিকারী (বিএসএ) ধীরেন্দ্র কুমার যাদব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, স্কুলটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আর ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন পাওয়ার পর স্কুলের অনুমোদন বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার থেকে অনুমোদন পাওয়া ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলটিতে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ওই বইটি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই প্রকাশ করেছে।

বইটির সম্পাদনার দায়িত্বে থাকা স্কুলের ব্যবস্থাপক কৌনাইন কাওসার এ ধরনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বইয়ে জাকির নায়েককে নিয়ে কোনো আলাদা অধ্যায় নেই। জনসচেতনতামূলক বইটি ২০১৫ সালে প্রকাশ করা হয়। সে সময় জাকির নায়েকর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। এটা বইয়ের পুরোনো সংস্করণ। এখন এতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

কৌনাইন কাওসার বলেন, ‘বইয়ের ২০ নম্বর পৃষ্ঠায় অনেক ইসলামি বিজ্ঞ ব্যক্তির ছবি রয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ছবি দেখে তাঁদের শনাক্ত করে ও নাম লেখে। আমরা শিশুদের জাকির নায়েকের ব্যাপারে কিছু শেখাচ্ছি না।’

জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো এবং সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই ভারত থেকে পালিয়ে যান ৫১ বছর বয়সী জাকির নায়েক। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) নিষিদ্ধ করেছে ভারত। ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজানে নিহত জঙ্গিদের কয়েকজন জাকির নায়েকের বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গুলশান হামলার পর জাকির নায়েকের কার্যকলাপ নজরদারিতে আনা হয়। গত বছরের নভেম্বরে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জাকির নায়েক ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আইআরএফের প্রেসিডেন্ট ও এর সদস্যরা ‘অবৈধ কার্যকলাপকে’ প্রশ্রয় দিচ্ছেন উল্লেখ করে দিল্লি হাইকোর্ট সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন।

জাকির নায়েক অবশ্য শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ নাকচ করে আসছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027570724487305