জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করাসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে দুই দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সামিউল ইসলাম ওরফে প্রত্যয় নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৯তম ব্যাচের) ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খেলার মাঠে অবস্থান নেন সামিউল। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সামিউল সেখানেই অবস্থান করছিলেন। তাঁর অন্য দাবিগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে গণরুম বিলুপ্ত করা ও হলের মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন নিশ্চিত করা।
ওই শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে হলের দায়িত্বরত শিক্ষকেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীর দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাসও দেন। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন সামিউল।
সামিউল বলেন, ‘আমি গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে এখানে অবস্থান করছি। আমার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব। হল প্রশাসন থেকে আসছিলেন, তাঁরা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, তবে দাবিগুলো বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ওয়ার্ডেন (শিক্ষার্থীদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা) অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘আমি গতকাল ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে দুবার দেখা করেছি। তাঁকে হল প্রশাসন থেকে আসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর অন্য দাবিগুলোও মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি। এমনকি সে যদি মুখের কথায় বিশ্বাস না করে, তাহলে লিখিত দেব বলেছি। তবে সব কটি দাবি বাস্তবায়নের জন্য সময় চেয়েছি। তাঁর রুমমেট অছাত্র, তাঁকেও হল থেকে বের করে দিতে চেয়েছি। কিন্তু সে তাঁর সব দাবি মেনে নিতে আমাদের সময় দিতেও রাজি হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমি তাঁকে (অবস্থানকারী শিক্ষার্থীকে) আসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। গণরুম বিলুপ্ত এবং তার বাকি যেসব দাবি রয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য সময় প্রয়োজন। সে আমাদের সময় দিতে ইচ্ছুক না। আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর রাখছি। এরপরও সে মিথ্যাচার করছে আমরা কেউ তার কাছে যাইনি। হলের সব শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীরাও সাক্ষী তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করে তাঁর দাবি মেনে নিতে চেয়েছি। এরপরও সে ওখানে বসে আছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।