দৈনিক শিক্ষাডটকম, প্রতিবেদক : রাজধানীর কোতোয়ালি থানার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পিত্তথলিতে পাথরের অপারেশনের আগে অজ্ঞান করার পর ইন্টারনেট ব্যবসায়ী তাপস চন্দ্র দাসের (৩৫) মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার কোতয়ালী থানার মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে।
তাপস চন্দ্র দাস ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা পূর্বপাড়া এলাকার মৃত জিতিশ চন্দ্র দাসের ছোট ছেলে ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসার পাশাপাশি মৈত্রী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
চিকিৎসার ভুলে তাপসের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। অনভিজ্ঞ চিকিৎসা সহকারী দিয়ে অজ্ঞান করা ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ তাঁকে অস্ত্রোপচার কক্ষে (অপারেশন থিয়েটার) নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের দাবি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৃত ব্যবসায়ী তাপসের শাশুরি ঝর্ণা রানী সরকার বলেন, ‘রোববার বিকেলে পিত্তথলি পাথরের অপারেশনের জন্য আমার মেয়ের জামাইকে হাসপাতালে ভর্তি করি। সন্ধ্যার দিকে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর রাত ৮টা নাগাদ বের করেনি। পরে আমরা জানতে চাইলে, তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ততক্ষণে তাপস মারা গেছেন।’
তাপসের স্ত্রী সুমনা সরকার বলেন, ‘ভুয়া অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তারের মাধ্যমে আমার স্বামীকে অজ্ঞান করে আর জ্ঞান ফেরাতে পারেনি। ওটির টেবিলেই তাঁকে হত্যা করেছে। এটা নির্ঘাত হত্যাকাণ্ড। আমরা এর বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, 'গত রাতে সুভাঢ্যা চিতাখোলায় ময়নাতদন্ত শেষে আমার স্বামীর মরদেহটি দাহ করা হয়। আমরা এ বিষয়ে আজকে থানায় মামলা করতে যাব।'
মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক জুয়েল বলেন, ‘দুর্ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা নেই। অভিজ্ঞ অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার দিয়েই রোগীকে অজ্ঞান করেই সার্জন অপারেশন করেছেন। এই রোগীর (তাপস) ক্ষেত্রে অজ্ঞান করার পর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি।’
হাসপাতালে তাপসের শরীরে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব সার্জিকাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার খন্দকার আব্দুল্লাহ আল হাছান। তিনি বলেন, ‘অপারেশন ভালো হয়েছে। পরে আমি পোস্ট অপারেটিভে রেফার দিয়ে ওটি থেকে বের হয়ে আসি। তবে রোগীর জ্ঞান কেন ফেরেনি, সেটা আমি বলতে পারব না। এটি অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তারের কাজ।’
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান বলেন, 'ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাপসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁর পরিবার আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন।'