অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ হোক

সাদিয়া আক্তার |

সামনেই নির্বাচনী পরীক্ষা আর আগামী বছরের প্রথম দিকেই আমাদের এসএসসি পরীক্ষা। প্রতিবছরই পরীক্ষার ফি আদায় নিয়ে সারা দেশেই চলে অনিয়ম। কোচিং ফি, উন্নয়ন ফি ইত্যাদির নামে বোর্ড নির্ধারিত ফিয়ের চেয়ে পাঁচ থেকে দশগুণ পর্যন্ত বেশি টাকা আদায় করা হয়ে থাকে। অথচ এই বাড়তি টাকা আদায়ের কোনো রশিদ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না। মাঝে মাঝে এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রতিবাদ করেছে আবার পত্র-পত্রিকায়ও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের এই প্রতারণা বন্ধ করা যাচ্ছে না।

ফরিদপুর শহরের সারদা সুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় বর্তমানে এক লাভজনক ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই বিদ্যালয়ের কতিপয় কোচিংবাজ শিক্ষক নানা রকম ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীকে তাদের কাছে  প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করছেন। বছরে দুটি পরীক্ষা নেওয়ার সরকারি নির্দেশ অমান্য করে প্রতিটি শ্রেণিতে চারটি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে আর পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরেই অনুপস্থিতির জন্য প্রত্যেক ছাত্রীর কাছ থেকে দশ টাকা হারে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই অনেক মেয়ে প্রতিমাসে ৫/৭দিন বিদ্যালয়ে আসতে পারে না।

এছাড়া সভা-সমাবেশ, মিছিল, খারাপ আবহাওয়া ইত্যাদি কারণেও অনেক ছাত্রীকে অনুপস্থিত থাকতে হয়। অথচ এই জরিমানা আদায়েও এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ অত্যন্ত কঠোর। আর এভাবে প্রায় ১৫০০ ছাত্রীর কাছ থেকে প্রতিমাসে গড়ে ৫০ টাকা করে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। এই টাকা কোথায় জমা হচ্ছে বা কোন খাতে খরচ হচ্ছে, তার কোনো জবাবদিহিতা নেই। আবার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্বাচনী পরীক্ষার আগেই আগামী ২০১৯ সালের উন্নয়ন ফি বাবদ দুই হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। অথচ আগামী বছর এই শিক্ষার্থীরা এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় আবারও উন্নয়ন ফি দিয়েই ভর্তি হতে হবে। তাহলে একই বছরে একজন শিক্ষার্থীকে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ফি দিতে হবে, যা অনৈতিক ও বেআইনি। সরকার দেশের এত উন্নয়ন করছে অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ফি শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে, এটা একেবারেই বোধগম্য নয়।

শুধু ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ই নয়, দেশের বেশিরভাগ বিদ্যালয়েই এমন অরাজক অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থী-অভিভাবক সকলেই এক শ্রেণির অসাধু ও কোচিংবাজ শিক্ষকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে এই অবস্থার অবসান চায়।

 

সারদা সুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ফরিদপুর

 

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048239231109619