পিরোজপুরের নাজিরপুরে এসএসসির ফর্ম পূরণে দাবি অনুযায়ী প্রধান শিক্ষককে অতিরিক্ত ফি দিতে ব্যর্থ হয়ে এক স্কুলছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই স্কুলছাত্রের মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শাখারীকাঠী গ্রামের দিনমজুর কৃঞ্চ কান্ত মৃধার ছেলে কল্যাণ মৃধা পিএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়। পরে উপজেলার শাখারীকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায়ও সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়।
কল্যাণ মৃধা ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার্থী। স্কুলে টেষ্ট পরীক্ষা চলাকালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে কল্যাণ ৪ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। সে কারণে এসএসসির ফরম পূরণ করতে তার কাছে প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন মন্ডল ৫ হাজার টাকা দাবি করেন।
দিনমজুর বাবা ছেলের ফরম পূরণে ৫ হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে না পেরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিরাজ মল্লিককের সহায়তায় এলাকা থেকে চাঁদা তুলে ছেলের ফরম পূরণ বাবদ প্রধান শিক্ষককে ২ হাজার ৫০০ টাকা দেন।
তখন টাকা রেখেও ফরম পূরণের নির্ধারিত তারিখ শেষ হয়ার পর গত বুধবার প্রধান শিক্ষক ওই ইউপি সদস্যকে ডেকে কল্যাণের ফরম পূরণ হবে না জানিয়ে টাকা ফেরত দেন। এ খবর শুনে ওদিনই কল্যাণ আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিন্তু পরিবারের লোকজন দেখে ফেলায় সে বেঁচে যায়।
ইউপি সদস্য মিরাজ মল্লিক জানান, ছেলেটি খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। ওর মা-বাবা দুজনই দিনমজুরের কাজ করে। ওর মা আমার কাছে আসলে এলাকা থেকে ফর্ম পূরণের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা তুলে প্রধান শিক্ষককে দিই। কিন্তু ৫ হাজার টাকার কমে তিনি ফরম পূরণ করেনি। আমি ছেলেটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রধান শিক্ষককে অনেক অনুরোধ করেছি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন মন্ডল জানান, অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। ওই ছাত্র টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ ফল করেছে। তাই বোর্ডের নিদের্শনা অনুযায়ী তার ফরম পূরণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।