অধিকাংশ শিক্ষক সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করতে পারেন না

নিজামুল হক |

সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি প্রণয়নের ৭ বছর চলছে। তবে এখনও এ পদ্ধতি নিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। শুধু তাই নয়, রীতিমতো শিক্ষকরাও এ পদ্ধতি এখনও আয়ত্ত করতে পারেননি। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা যে এ পদ্ধতি এখনও বুঝছেন না তার প্রমাণ মেলে গত মে মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত সরকারি এক জরিপে। এই জরিপে দেখা যায়, এখনও দেশের ৫২ ভাগ শিক্ষক নিজে স্কুলের পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন করতে পারেন না।  এর ৩০ ভাগ শিক্ষক অন্য শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। আর বাইরে থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে পরীক্ষা নেন ২২ ভাগ শিক্ষক।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বরিশাল এবং ময়মনসিংহে। বরিশালের মাত্র ২০ ভাগ শিক্ষক নিজে প্রশ্ন করতে পারেন। বরিশালের ৫৫ ভাগের বেশি শিক্ষক বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেন। বাকি শিক্ষকরা অন্য শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন করেন।  আর ময়মনসিংহের মাত্র ২৩ ভাগ শিক্ষক প্রশ্ন করতে পারেন। ৪৩ ভাগ শিক্ষক প্রশ্ন করতে অন্য শিক্ষকের সহায়তা নেন। অবশিষ্ট ৩০ ভাগের বেশি শিক্ষক বাইরে থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে পরীক্ষা নেন।

ঢাকা অঞ্চলের সৃজনশীল বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি শিক্ষকরা। এই অঞ্চলের অর্ধেকেরও কম শিক্ষক নিজে প্রশ্ন করতে পারেন। ১৬ ভাগ শিক্ষক বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেন। আর ৩৬ ভাগ শিক্ষক প্রশ্ন প্রণয়নের ক্ষেত্রে অন্য শিক্ষকের সহায়তা নেন।

নিজে প্রশ্ন প্রণয়নের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ও রংপুরের অবস্থা প্রায় সমান।  তবে শিক্ষামন্ত্রীর নিজ অঞ্চল সিলেট এবং গত পাবলিক পরীক্ষার পাসের হারে পিছিয়ে থাকা কুমিল্লার সৃজনশীলের অবস্থা ভালো। এই অঞ্চলের ৭১ ভাগের বেশি শিক্ষক প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করেছেন।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, সরকারি হিসাবে যাই হোক, দেশে এখনও ৮০ ভাগ শিক্ষক সৃজনশীল পদ্ধতি বোঝেন না, প্রশ্ন করতে পারেন না। শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ  দেওয়া হয়নি। নানা দিক থেকে তারা বঞ্চিত। সৃজনশীল পদ্ধতি পুরোপুরি আশ্বস্ত করতে আরো ১০ বছর লাগবে বলে মনে করেন তিনি।

সৃজনশীল পদ্ধতি চালুর বিষয়ে যখন আলোচনা চলছিল তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যুগ্মসচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অবসরে যাওয়া সচিব নজরুল ইসলাম খান। তিনি এই প্রতিবেদকে বলেন, এটি অবশ্যই একটি ভালো পদ্ধতি। কিন্তু পদ্ধতিটি ভালোভাবে চালাতে হলে দক্ষতা লাগবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, সৃজনশীল পদ্ধতি নতুন কোনো পদ্ধতি নয়। এটি আগেও চালু ছিল। কিন্তু শিক্ষকরা হয়তো না জেনে এ পদ্ধতির ভয় পাচ্ছেন। তিনি পর্যাপ্ত প্রশিক্ষক ও স্কুল শিক্ষকদের ভীতি কমানোর ওপর জোর দেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037300586700439