অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপবৃত্তির তালিকাভুক্ত করতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

রংপুর প্রতিনিধি |

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নাম উপবৃত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দেড় থেকে ২ হাজার টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার খলেয়া খাপড়ীখাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন ও অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে।

টাকা দাবির একটি অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে। এতে অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর এক অভিভাবককে জানান, উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হলে আগে কাগজপত্র ঠিক থাকতে হবে। তা ঠিক থাকলে ওই ব্যক্তির বোনের উপবৃত্তি হয়ে যাবে। তবে এ জন্য অফিশিয়াল খরচ আছে, এটা দিতে হবে।

কত খরচ লাগবে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘একেকজনের কাছ থেকে একেকভাবে টাকা নিচ্ছি। তবে আপনার বোনের জন্য দেড় হাজার টাকা লাগবে। এ টাকা আমার এই মোবাইল নাম্বারে পাঠিয়ে দেন, বোনের উপবৃত্তি হয়ে যাবে।’ 

টাকা নেওয়ার যুক্তি হিসেবে অফিস সহকারী জানান, অনলাইনে কাজ করতে ৩৫০ টাকা খরচ আছে। এ ছাড়া এ টাকায় অফিসকর্মীদের হাত করতে হয়। উপবৃত্তি হলে ১২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এ জন্য অফিসে টাকা দিতে হবে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে ১৫৯ শিক্ষার্থী। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট কর্মসূচির (উপবৃত্তি) আওতায় আসার জন্য কলেজে আবেদন করেছেন। এ সুযোগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধ্যক্ষের নির্দেশে অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে আদায় করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘উপবৃত্তির জন্য কলেজে আবেদন করেছি। এ জন্য অফিস সহকারী দুই হাজার টাকা দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষ স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। স্যার বলেন, অফিস সহকারী যা বলে শোনো। কলেজে টাকা না দিলে নাকি আমাদের উপবৃত্তি হবে না। এ জন্য দেড় হাজার টাকা দিয়েছি।’

নাম প্রকাশ না করে এক অভিভাবক বলেন, ‘উপবৃত্তি গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য। এটা পেতে তো কোনো টাকা লাগার কথা নয়। অথচ কলেজের অধ্যক্ষ টাকা ছাড়া কারও উপবৃত্তির আবেদন জমা নিচ্ছেন না।’

যোগাযোগ করা হলে অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি।’ অন্যদিকে ফোন রেকর্ডের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

কলেজের অধ্যক্ষ জালাল বলেন, ‘আবেদন পাঠানোর জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ করে টাকা নিতে বলেছি। এর বেশি নেওয়ার কথা নয়।’ অডিও রেকর্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রেকর্ডটি শুনেছি। সেখানে তিনি (অফিস সহকারী) কেন টাকা চেয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম জানান, উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক টাকা নেওয়ারও বিধান নেই।

কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না  বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপবৃত্তি করে দেওয়ার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047240257263184