সাভার হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজঅধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, অব্যাহতি দেয়া হলেও সরছেন না

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

অনিয়ম, দুর্নীতিসহ নানা কারণে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের একজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বোর্ডের গঠিত তদন্ত কমিটি অব্যাহতির সুপারিশ করে। কিন্তু মাস গড়ালেও ওই অধ্যক্ষ রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের কোন তোয়াক্কা করছেন না তিনি। উল্টো তার দাপটে অতিষ্ঠ কলেজের শিক্ষক, কর্মচারীরা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এই আচরণে বিব্রত বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

ঢাকার সাভারে অবস্থিত সাভার হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। চাকরির নির্দিষ্ট বয়সসীমা পার হওয়াসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড সভা কামাল হোসেনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বোর্ড সভার এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে কলেজে স্বপদে অবস্থান করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তার পক্ষে না থাকায় তিনি কলেজের অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়াসহ নানা হয়রানি করছেন।

কলেজ ও হোমিওপ্যাথি বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসেনের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয় কলেজের অন্য শিক্ষকরা বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসেনের চাকরির মেয়াদ দুই বছর আগে শেষ হলেও গোপনে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে নিয়েছেন।

অথচ হোমিওপ্যাথি বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি চাকরির বয়সসীমা শেষে অবসর গ্রহণের পর কোন ব্যক্তি সরকার অনুমোদিত হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়মিত প্রিন্সিপাল বা ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে কামাল হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি নিজে অবৈধ হয়েও আইন লঙ্ঘন করে ও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সরকারি বয়সসীমা শেষে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া ডা. আবদুল ওয়াদুদকে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ ও কলেজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে হোমিওপ্যাথি বোর্ড ডা. শেখ মো. ইফতেখার উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। সবাই বোর্ডের সদস্য। কমিটির অন্য সদস্য হলেন, ডা. কায়েম উদ্দিন, ডা. আশিষ শংকর নিয়োগী, ডা. আবদুর রাজ্জাক তালুকদার ও বোর্ডের রেজিস্টার কাম সেক্রেটারি ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তদন্ত কমিটি দীর্ঘ তদন্ত ও অনুসন্ধানে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পায়। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসেনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

পরবর্তীতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগের বিষয় তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে গত ৫ এপ্রিল বোর্ড সভায় পর্যালোচনা করা হয়। সভায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বোর্ডের বিধি মোতাবেক উক্ত কলেজে একজন নিয়মিত নতুন পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়।

পরবর্তীতে বোর্ডের রেজিস্টার কাম সেক্রেটারি ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরিত বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত সংবলিত একটি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর প্রেরণ করা হয়। কিন্তু বোর্ডের সিদ্ধান্তের পরেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসেন এখনও কলেজে দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. কামাল হোসেনের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয় কোন কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে কল কেটে দেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048539638519287