অধ্যাপক রাজনের মরদেহে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজন কর্মকারের মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সোমবার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা বলেন, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত করে কারণ বলা যাবে। তবে মৃতদেহে কোনো প্রকার আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

এ দিকে সোমবার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে রাজনের লাশ দেখতে যান তার স্ত্রী ডা. কৃষ্ণা মজুমদার। স্বামীর মৃত্যুতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিএসএমএমইউ'র চিকিৎসকরা জানান, ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে রাজনের মৃতদেহ তার কর্মস্থল বিএসএমএমইউ-এ নেওয়া হয়। তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দুপুর ২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এখলাসপুরের উদ্দেশে নিয়ে রওনা হন স্বজনরা।

গত রোববার ভোরে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়ার আগেই রাজনের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয় নানা রহস্য। তার চিকিৎসক সহকর্মী এবং স্বজনের অভিযোগ তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তাকে হত্যা করা হয়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের মেয়ে ডা. কৃষ্ণা মজুমদারের স্বামী ডা. রাজন। কৃষ্ণাও বিএসএমএমইউ'র সহকারী অধ্যাপক। তাদের বাসা ফার্মগেট এলাকার ইন্দিরা রোডে। তবে জানুয়ারি থেকে তারা সেখানে থাকতেন না। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ন্যাম ভবনে থাকতেন।

ইন্দিরা রোডের ৪৭ নম্বর বাড়িটির নিরাপত্তা কর্মী বাদশা মিয়া জানান, ৩/সি ফ্ল্যাটে চিকিৎসক দম্পতি ভাড়া থাকতেন। তবে এ মাসের শেষে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা। জানুয়ারি থেকে তারা বাসায় থাকেন না। ডা. রাজন মাঝেমধ্যে বাসায় আসতেন, তবে রাত কাটাতেন না। ভাড়ার টাকা দিয়ে চলে যেতেন। শনিবার রাত ১টার দিকে রাজন বাসায় আসেন। দেড়টার দিকে নিচে নেমে যান। ১৫-২০ মিনিট পর আবার তিনি বাসায় ওঠেন। রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে তার স্ত্রী ডা. কৃষ্ণা গাড়িতে করে ওই বাসায় আসেন। গাড়ির ড্রাইভার নিচে অবস্থান করছিলেন। আধাঘন্টা পর কৃষ্ণা ড্রাইভারকে বাসায় ডাকেন। এরপরই ড্রাইভার চিৎকার করে লিফট চালু করতে বলেন নিরাপত্তাকর্মীকে। অচেতন অবস্থায় ডা. রাজনকে গাড়িতে করে তারা স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই রাজনের মৃত্যু হয়েছে।

খবর পেয়ে বিএসএমএমইউ'র চিকিৎসক সহকর্মী ও স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে যান। তারা অভিযোগ তোলেন-স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাকে হত্যা করা হয়েছে। অবশ্য রাজনের মামা সুজন কর্মকার রোববার শেরেবাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, রাজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি।

শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, আমরা তার অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে রাজন কর্মকারের মৃতদেহ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সোমবার দুপুরে বিএসএমএমইউ'র বি ব্লকের শহীদ ডা. মিলন হলে আনা হয়। এ সময় এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয় সেখানে। রাজনের মরদেহে বিএসএমএমইউ'র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা পুষ্পস্তবক অপর্ণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026040077209473